এর আগেও গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে কপ্টার ব্যবহৃত হয়েছে। ফাইল চিত্র
আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলার জন্য যেমন হেলিকপ্টার ভাড়া নিতে চলেছে বাংলার পরিবহণ দফতর। ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপে হবে গঙ্গাসাগর মেলা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই মেলায় পুণ্যস্নানে আসেন কয়েক লক্ষ মানুষ। তাঁদের নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক কাজ দ্রুত করার জন্য দু’টি হেলিকপ্টার ভাড়া নিতে চলেছে পরিবহণ দফতর।
এই খবর যে দিন প্রকাশ্যে এল ঘটনাচক্রে, তার আগের দিন অর্থাৎ বুধবার হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে সস্ত্রীক দেশের সেনা সর্বাধিনায়ক (চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ) বিপিন রাওয়তের। সেই খবর পাওয়ার পর বাংলার উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, পাহাড়ি এলাকায় সব সময়ই হেলিকপ্টার ঝুঁকিপূর্ণ। তবে সমতলে হেলিকপ্টার ব্যবহারে ঝুঁকি কম। যে কারণে প্রশাসনিক কাজে অনেক সময়ই কপ্টার ব্যবহার করতে দেখা যায় প্রশাসনকে। এর আগেও গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে কপ্টার ব্যবহৃত হয়েছে।
বুধবার হেলিকপ্টার ভাড়া নেওয়ার জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গাসাগর মেলায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বা আপৎকালীন কোনও বিশেষ প্রয়োজনে যাতে দ্রুততার সঙ্গে কলকাতায় যাতায়াত করা যায়, সেই কারণেই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সাগরদ্বীপে গঙ্গাসাগর মেলায় যোগ দিতে হলে কলকাতা থেকে যেতে হয় কাকদ্বীপের লট-৮-এ। সেখান থেকে ভেসেলে চেপে মুড়িগঙ্গা পার হয়ে যেতে হয় সাগরদ্বীপের কচুবেড়িয়া। সেখান থেকে আবার বাসে চড়ে আরও ৩০ কিলোমিটার পথ গেলে পৌঁছনো যায় গঙ্গাসাগর মেলার ময়দানে।
মেলার সময় এই দীর্ঘ পথ যেতে সাধারণ যাত্রীদের সময় লাগে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা। ভিআইপিদের জন্য সেই সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। আবার মুড়িগঙ্গায় ভাটা শুরু হলে সেই সময় ভেসেল পারাপার বন্ধ রাখতে হয়। এমন অবস্থায় মেলা উদ্যানে পৌঁছাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় সাধারণ তীর্থযাত্রী থেকে শুরু করে মেলার কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত প্রশাসনিক কর্তাদের। যে কারণে এ বছর যে কোনও ধরনের আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখছে পরিবহণ দফতর। তার জন্য ভাড়ায় হেলিকপ্টার নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তা কথায়, ‘‘মূলত কোনও জরুরি সরকারি কাজ তথা সাগর মেলায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তিকে দ্রুত যাতে কলকাতায় আনা যায়, সে কথা মাথায় রেখেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গঙ্গাসাগর মেলায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে কোনও তীর্থযাত্রী যাতে চিকিৎসার অভাবে মারা না যান, সেই জন্যই জোড়া হেলিকপ্টারের বন্দোবস্ত রাখা হবে এ বার।’’