ভোলবদল: নীল-সাদা উর্দিতে কন্ডাক্টর। —নিজস্ব চিত্র।
নীল উর্দি চলে এল সরকারি পরিবহণ নিগমেও। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের চালক-কন্ডাক্টরদের উর্দি হচ্ছে অনেকটা সিভিক ভলান্টিয়ারদের মতো। আকাশি নীল জামা, গাঢ় নীল প্যান্ট। জামার পকেট সাদা। এক দিকে থাকছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’এর প্রচার। অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের লোগো।
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পাঁচটি পরিবহণ নিগমের মধ্যে তিনটিকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেন। ওই তিন নিগম হল— কলকাতা রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম (সিএসটিসি), ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি) এবং পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগম (ডব্লুবিএসটিসি)। সেইমতো পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম গড়ে ধাপে ধাপে তিন নিগমের কাজকর্ম এক জায়গায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে তিনটি নিগমের চালক-কন্ডাক্টরদের নীল
উর্দি পরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর।
পরিবহণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারি সংস্থা মঞ্জুষাকে চালক-কন্ডাক্টরদের উর্দি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই এক-একটি ডিপো ধরে ওই উর্দি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে পুজোর পরেই সব ডিপোয় ওই উর্দি চালু হয়ে যাবে।’’
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, তিনটি নিগমের মধ্যে সিএসটিসি এবং ডব্লুবিএসটিসি-র সে ভাবে নির্দিষ্ট কোনও উর্দি ছিল না। বহু আগে সিএসটিসি-র খাকি উর্দি উঠে যায়। সিটিসি-র অবশ্য উর্দি ছিল। পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, নতুন উর্দি তৈরির সঙ্গে সঙ্গেই শতাব্দী প্রাচীন ওই সংস্থার পোশাকের ঐতিহ্যও শেষ হতে চলল।
রাজ্য পরিবহণ নিগমের কর্তারা জানান, সিটিসি-র খাকি উর্দির সঙ্গে জড়িয়ে ছিল ট্রামের ঐতিহ্য। সিটিসি যখন বাস পরিষেবা চালু করে, তাতে নিয়োগ করা হয়েছিল ট্রামের কন্ডাক্টরদেরই। একই সংস্থার দু’টি পৃথক পরিষেবা চালু থাকলেও উর্দির ক্ষেত্রে তারা একই ছিল। ট্রামের পাশাপাশি বাস চালানোর প্রচেষ্টা সিটিসি প্রথম করে ১৯২০ সালে, ব্রিটিশ আমলে। পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। নব্বই দশক থেকে ট্রাম ক্রমশ ক্রমশ কমতে থাকে। অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে সিটিসি ১৯৯২ সালে ফের বাস পরিষেবা চালু করে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বাস পিছনে ফেলে দেয় ট্রামকে। বর্তমানে হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা এবং নদিয়া মিলে ৪১টি রুটে মোট ৩৮৫টি বাস চলে। সব বাসের কন্ডাক্টরদেরই উর্দি ছিল খাকি জামা-প্যান্ট। এ বার সেই রঙে পরিবর্তন।