Mamata Banerjee

Modi-Mamata: নির্দেশিকা অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, টাকা মঞ্জুর করা হোক, মোদীকে বললেন মমতা

মমতা মোদীকে রাজ্যের কোষাগারের একটি অসুবিধার কথাও জানিয়েছেন। তা হল, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা প্রায়ই অর্থ বছরের শেষে রাজ্যের হাতে আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২২ ০৬:৪৪
Share:

ছবি: টুইটার।

ভুয়ো জব কার্ড দেখিয়ে একশো দিনের কাজের টাকা তোলা হচ্ছে এবং প্রকৃত দাবিদারদের বদলে তৃণমূলের কর্মীদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গের টাকা আটকে রেখেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানালেন, আইন মেনেই পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজের প্রকল্প চলছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী গরমিল ঠেকানোর সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বার প্রকল্পের টাকা মঞ্জুর করা হোক।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম বদলে ‘বাংলা’ আবাস যোজনা ও ‘বাংলা’ গ্রাম সড়ক যোজনা করে দেওয়ায় এই দু’টি প্রকল্পেও কেন্দ্র রাজ্যকে টাকা দেওয়া বন্ধ করেছিল। চাপের মুখে সম্প্রতি জেলায় জেলায় ফের ‘বাংলা’ মুছে ‘প্রধানমন্ত্রী’ লেখা হচ্ছে। আজ মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে এ-ও জানালেন, গ্রামীণ সড়ক ও আবাস প্রকল্পের সমস্ত নির্দেশিকাই পালন করা হচ্ছে। এ বার দুই প্রকল্পের টাকা মঞ্জুর করুক কেন্দ্র।

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আজ প্রধানমন্ত্রীর হাতে চিঠি তুলে দিয়ে জানিয়েছেন, একশো দিনের কাজ, গ্রামীণ সড়ক ও আবাস যোজনার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের মোট ১ লক্ষ ৯৬৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এটি ৩১ জুলাই পর্যন্ত হিসেব। এর মধ্যে একশো দিনের কাজ, গ্রামীণ সড়ক ও আবাস যোজনার প্রকল্পে প্রায় ১৭,৯৯৬ কোটি টাকা পাওনা। মমতা প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া তিন পৃষ্ঠার চিঠিতে জানিয়েছেন, ‘এই প্রকল্পগুলিতে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের সমস্ত নির্দেশিকা মেনে চলছে। তারপরেও অর্থ না মেলায় প্রকল্প ব্যাবহত হচ্ছে। গ্রামের মানুষ সঙ্কটে পড়েছেন।’ বিজেপি তথা বিরোধী শিবির মনে করছে, এত দিন মমতা কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতের নীতি নিয়ে চলছিলেন। চাপের মুখে এখন তিনি সুর নরম করলেন। কেন্দ্রের টাকা পেতে মোদী সরকারের সমস্ত নির্দেশিকা মেনে চলার বার্তা দিলেন।

Advertisement

একশো দিনের কাজ, গ্রামীণ সড়ক ও আবাস যোজনার টাকা নিয়ে ১২ মে ও ৯ জুনও দু’বার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মমতা। তার আগে রাজ্যের বকেয়া নিয়ে গত নভেম্বরেও চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। উল্টে একশো দিনেরকাজে রাজ্যে গরমিল হচ্ছে বিজেপি প্রচারে নেমেছে। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা বলেছিলেন, তিন বছর ধরে রাজ্য কোনও হিসেবই দেয়নি। রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে জব কার্ডের তথ্য পাঠানো হয়। তারপরেও কোথায়, কী ভাবে গরমিল হচ্ছে, তার তদন্তে রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল এর পিছনে রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে। বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন, তৃণমূলনেত্রী নিজেই এখন রণে ভঙ্গ দিতে চাইছেন।

মমতা আজ মোদীকে রাজ্যের কোষাগারের একটি অসুবিধার কথাও জানিয়েছেন। তা হল, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা প্রায়ই অর্থ বছরের শেষে রাজ্যের হাতে আসে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের রূপায়ণে সমস্যা হয়। মমতার দাবি, কেন্দ্রীয় করের ভাগ হিসেবে গত অর্থ বছরের শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ প্রায় ১৭,৭৬২ কোটি টাকা কম পেয়েছে। সমগ্র শিক্ষা মিশন, মিড-ডে মিল, খাদ্য ভর্তুকি বাবদ পাওনার কথাও উল্লেখ করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, ইয়াস, আমপান, বুলবুলের ক্ষতিপূরণ বাবদও কেন্দ্রের কাছে ৪২ হাজার কোটি টাকার বেশি দাবি জানিয়েছিল রাজ্য। রয়েছে। কেন্দ্রের হিসেব অবশ্য বলছে, ইয়াস ও আমপানের জন্য রাজ্যকে প্রায় ৫,৯০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। মমতা জানিয়েছেন, ‘এই বিপুল ১ লক্ষ ৯৬৮ কোটি টাকা পাওনা থাকায় রাজ্যের পক্ষে কাজ চালানো ও রাজ্যের মানুষের দেখভাল করা প্রচণ্ড কঠিন হয়ে পড়েছে।’ ইয়াস, আমপানের মোকাবিলার সঙ্গে কোভিডের মোকাবিলাতেও রাজ্যকে যথেষ্ট খরচ করতে হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement