নবান্ন। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে বেআইনি ভাবে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ নিয়ে ভুরি ভুরি মামলার শুনানি চলছে আদালতে। এই নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এখন জেলে। কারাবাস করছেন শিক্ষা দফতরের একাধিক প্রাক্তন কর্তাও।
এই আবহে প্রতিটি জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-দের কাছে রাজ্য সরকার জানতে চাইল, কোন স্কুলে অবৈধ ভাবে নিয়োগ হওয়া কোন শিক্ষক এখনও শিক্ষকতার কাজ করছেন। আর ডিআই-দের কাছে স্কুল শিক্ষা কমিশনারের এই সংক্রান্ত চিঠি ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়েছে।
বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, সরকারের কাছ থেকে চিঠি পাওয়ার পরে কোনও অবৈধ শিক্ষক এখনও স্কুলে কাজ করছেন কিনা, তা ডিআই-রা তাঁদের কাছে জানতে চাইছেন। প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, এই তথ্য তাঁদের জানার কথাই নয়। কারণ, শিক্ষকদের সুপারিশপত্র দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং নিয়োগপত্র দিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন স্কুলগুলোতে অবৈধ ভাবে নিয়োগ হওয়া শিক্ষক আছেন কি না, তা জানতে চেয়ে কলকাতা হাই কোর্ট
তিন সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলেছিল স্কুল শিক্ষা দফতরকে। সেই কমিটির মধ্যে রয়েছেন স্কুল শিক্ষা কমিশনার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং এসএসসি-র চেয়ারম্যান। সূত্রের খবর, সেই কমিটির বৈঠকের পরেই স্কুল শিক্ষা কমিশন ডিআইদের ওই চিঠি পাঠিয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের তরফে অভিযোগ জানানো হয়েছে, ডিআই-রা পুরো বিষয়টি তাঁদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে।
প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির কথায়, ‘‘নতুন নিযুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগপত্র এবং সুপারিশপত্র দেখে স্কুলে যোগদান করাই আমরা। আমাদের পক্ষে কী ভাবে জানা সম্ভব, কোন শিক্ষকের অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। এটা আমাদের এক্তিয়ারের মধ্যেও পড়ে না।’’
শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চর সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘যাঁরা এত দিন অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত, তাঁরাই এখন আদালতের চাপে পড়ে অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের ধরার জন্য নিচুতলায় নির্দেশ পাঠাচ্ছেন। এর থেকে হাস্যকর আর কী হতে পারে? এই সব অবৈধ নিয়োগের জন্য সম্পূর্ণ দায় সর্বোচ্চ আধিকারিক, নেতা-মন্ত্রীদের।"
এক ডিআই জানিয়েছেন, যেহেতু আদালতে নির্দেশ দিয়েছে, তাই এই কাজে সকলের সহযোগিতায় করতে হবে। তাই প্রধান শিক্ষকদের এই বিষয়ে সহযোগিতা করার জন্য তথ্য চাওয়া হয়েছে।