Mamata Banerjee

ফেব্রুয়ারির মধ্যে জমে থাকা দু’হাজার কোটি খরচের নিদান রাজ্যের

কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ এবং রাজ্য অর্থ কমিশনের প্রাথমিক বরাদ্দ হিসাবে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা রয়েছে রাজ্যের হাতে।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৫৯
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নজরে লোকসভা ভোট এবং লক্ষ্য ফেব্রুয়ারি মাস।

Advertisement

তার আগে প্রধানত গ্রামবাংলার বিভিন্ন ধরনের পরিকাঠামো তৈরির জন্য প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা খরচের লক্ষ্য বেঁধে দিল রাজ্য সরকার। এটা নতুন বরাদ্দের টাকা। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, অথচ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের হাতে থাকা বরাদ্দের প্রায় অর্ধেকই এখনও অব্যবহৃত। সেটা খরচই করা যায়নি।

সূত্রের খবর, কেন্দ্রের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ এবং রাজ্য অর্থ কমিশনের প্রাথমিক বরাদ্দ হিসাবে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকা রয়েছে রাজ্যের হাতে। রাজ্যের নির্দেশ, সেই বরাদ্দে যাবতীয় কাজের পরিকল্পনা, দরপত্র ডেকে ঠিকাদার নির্বাচন করে কাজের বরাত দেওয়ার কাজ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করে ফেলতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। কারণ, তার পরে যে কোনও সময়ে লোকসভা ভোট ঘোষণা করে দেবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। তার পরে নতুন কোনও কাজের ঘোষণা করা যাবে না। শুধু চালু কাজ থামবে না ভোটের কারণে।

Advertisement

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, অতীতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের পুরো বরাদ্দ খরচ করা যায়নি। এক বছরের খরচ না হওয়া বরাদ্দ পরের বছর থেকে গিয়েছে। ফলে এই বিপুল পরিমাণ বরাদ্দের খরচ এত কম সময়ে করা সম্ভব কি না, জল্পনা রয়েছে তা নিয়েও। যদিও রাজ্যের দাবি, বকেয়া সহ-নতুন কাজ সেরে ফেলতে সমস্যা হবে না।

তথ্য অনুযায়ী, অর্থ কমিশনের সুনির্দিষ্ট (টায়েড, বা নির্দিষ্ট কাজে খরচ) খাতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে বরাদ্দ এসেছে প্রায় ৯৯৬ কোটি টাকা। সুনির্দিষ্ট নয় (আনটায়েড বা অন্য একাধিক কাজে খরচ) এমন খাতে ওই ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে বরাদ্দ রয়েছে প্রায় সাড়ে ছ’শো কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ওই খাতে মোট বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ১৬৪৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে রাজ্য অর্থ কমিশনের প্রায় ৩১৭ কোটি টাকা পেয়েছে জেলাগুলি। দুই ধরনের বরাদ্দ মিলিয়ে মোট অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৯৬৪ কোটি টাকা।

পঞ্চায়েত দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সবক’টি জেলা মিলিয়ে চলতি (২০২৩-২৪) অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রায় ৬০০৭ কোটি (নতুন এবং আগের বরাদ্দ মিলিয়ে) টাকা হাতে ছিল। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে বেশ কিছু টাকা। ফলে এখনও পর্যন্ত খরচ না হওয়ার অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩০৮৯ কোটি টাকা। ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি খরচ করতে পেরেছিল দুই বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি-সহ ন’টি জেলা। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনা-সহ ১২টি জেলা ৫০ শতাংশের নীচে খরচ করেছিল।

পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কথায়, ‘‘এখন এক লক্ষ টাকার উপরে কাজ হলে ই-টেন্ডার করতে হয়। ফলে সেখানে কিছুটা সমস্যা হয়। আবার বেশিরভাগ পঞ্চায়েত বোর্ড নতুন। ফলে তাঁদের কাজ বুঝতেও কিছুটা সময় লাগছে।’’ মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘নির্ধারিত খাতে খরচের ক্ষেত্রে বাঁধাধরা নিয়ম থাকে। সেটাও সমস্যার। তবে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল অভিনব উপায় বের করে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।’’

আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ক্ষেত্রে বিগত পঞ্চায়েতগুলি ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের যে পরিকল্পনা করে গিয়েছে, তার ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্য অর্থ কমিশনের ক্ষেত্রে নতুন পঞ্চায়েত বোর্ডগুলি ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য যে পরিকল্পনা করবে, তার কাজ হবে। তবে অভিজ্ঞ আধিকারিকদের মতে, এই সব বরাদ্দে কাজের প্রকৃতিগুলির মধ্যে বেশ মিল রয়েছে। আবার প্রায় একই ধরনের কাজে এই সব বরাদ্দ যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে স্বচ্ছ ভারত মিশন, বা জলজীবন মিশনের বরাদ্দও। ফলে নিবিড় খরচ করতে গেলে পরিকল্পনায় অভিনবত্ব আনা আবশ্যিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement