অর্থ দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পঞ্চায়েত দফতর পাচ্ছে ৩০০ কোটি টাকা এবং পূর্ত দফতরের ভাঁড়ারে যাচ্ছে ১০০ কোটি টাকা। ফাইল চিত্র।
ভাঁড়ারের দুরবস্থা থেকে শুরু করে দুর্নীতির অভিযোগকে ঘিরে বিরোধী শিবিরের রাজনৈতিক তৎপরতা ও মামলা-মকদ্দমার মধ্যে রাজ্য সরকার তথা শাসক দলের সব চেয়ে বড় চিন্তা এখন পঞ্চায়েতের ভোট-বৈতরণী পেরোনো। এই অবস্থায় গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন (আরআইডিএফ) খাতে বিপুল অঙ্কের বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আরআইডিএফ২৮-এর অধীনে ১৩টি দফতরের জন্য সব মিলিয়ে প্রায় ৭১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এবং তার মধ্যে সর্বাধিক অর্থ বরাদ্দ হয়েছে পঞ্চায়েত দফতরের জন্য। বরাদ্দের পরিমাণের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পূর্ত দফতরে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বড় অংশের মতে, পঞ্চায়েত ভোটে চোখ রেখেই ওই দফতরকে সব চেয়ে বেশি টাকা দেওয়া হচ্ছে। আর প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই অর্থ পাওয়ায় দ্রুত কাজ শুরু করতে সমস্যা হবে না।
অর্থ দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পঞ্চায়েত দফতর পাচ্ছে ৩০০ কোটি টাকা এবং পূর্ত দফতরের ভাঁড়ারে যাচ্ছে ১০০ কোটি টাকা। বাকি অর্থ প্রাণিসম্পদ, সমবায়, খাদ্য, সেচ, মৎস্য, জলসম্পদ, কৃষি, নারী-শিশু-সমাজকল্যাণ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন, স্বাস্থ্য এবং ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প দফতরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে।
প্রশাসনিক রীতি-রেওয়াজ অনুযায়ী গ্রামীণ পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজকর্মের পরিকল্পনা তৈরি হয় জেলা স্তরে এবং সেই পরিকল্পনা পৌঁছে যায় পঞ্চায়েত দফতরে। রাজ্য সরকার সেই সব প্রস্তাব পাঠায় নাবার্ডের কাছে। নাবার্ড অনুমোদন দিলে কাজ শুরুর সম্মতি দেয় রাজ্য। মাঝখানে এই অর্থের সরবরাহ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছিল। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নাবার্ডের চেয়ারম্যান-পদে কেউ না-থাকায় অর্থ পেতে কিছুটা দেরি হয়েছে। নতুন চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেওয়ার পরেই প্রথম বোর্ড মিটিংয়ে পশ্চিমবঙ্গের জন্য এই বরাদ্দ মঞ্জুর করেছে নাবার্ড।
রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “আরআইডিএফ২৮-এর আওতায় গ্রামীণ পরিকাঠামোর চিহ্নিত করা কাজগুলির টেন্ডার বা দরপত্র ডাকা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে কাজ শুরু করে দিতে কোনও বাধা থাকবে না।”
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, সরকারের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায় বিভিন্ন গ্রামীণ পরিকাঠামোর মধ্যে রাস্তা নিয়ে গ্রামবাসীদের দাবিদাওয়া ও অভিযোগ উঠে এসেছিল। এত দিন বিভিন্ন বরাদ্দ আটকে থাকায় সেই কাজে চিন্তাও বাড়ছিল রাজ্য সরকারের। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা বাদ দিলে গ্রামীণ ক্ষেত্রে প্রায় সব বরাদ্দই পেতে শুরু করেছে সরকার। তাতে ভোটের আগে কিছুটা স্বস্তিতে থাকবেন প্রশাসনিক কর্তারা। আটকে থাকা প্রধানমন্ত্রী আবাস ও সড়ক যোজনা, জলজীবন মিশনের টাকাও পেতে শুরু করেছে নবান্ন। আরআইডিএফের বরাদ্দ হাতে আসায় একসঙ্গে সব প্রকল্পের কাজ চালানো যাবে।