রাজ্যপাল বনাম স্পিকার দ্বন্দ্ব বেড়েই চলেছে। ফাইল চিত্র।
রাজভবনে বিল আটকে থাকা নিয়ে তথ্যের অধিকার আইন (আরটিআই)-এ কেউ জানতে চাইলেই জবাব দেবেন তিনি। এমনটাই দাবি করলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল জগদীপ খনকড়ের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘ওঁর কথার উত্তর দিতে দিতে আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। উনি কী করে ফাইল আটকে না রাখার কথা বলেছেন জানি না। বিধানসভা থেকে কোনও ফাইল গেলে তা বিধানসভাতেই ফেরত আসা উচিত।’’ এর পরেই তিনি বলেন, ‘‘কেউ আরটিআই করুক, আমরা উত্তর দিয়ে দেব।’’
প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন বিধানসভায় বিআর আম্বেডকরকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন রাজ্যপাল। তিনি সেখানে বলেছিলেন, ‘‘বলা হচ্ছে আমি বিভিন্ন বিল আটকে রেখেছি। আমি স্পষ্ট জানাতে চাই, আমার কাছে কোনও বিল আটকে নেই। আমার কাছে কোনও বিল পাঠানো হলে তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এখানে একের পর এক অভিযোগ আমার এবং আমার অফিসের বিরুদ্ধে করা হচ্ছে। যা গণতন্ত্রের জন্য ভাল উদাহরণ নয়।’’ রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘‘স্পিকার সরাসরি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন। রাষ্ট্রপতি যে বিলে সম্মতি দেননি সেই বিলও আটকে রাখার অভিযোগ তোলা হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। আমি কোনও তথ্য চাইলে সঠিক ভাবে তা আমার কাছে পাঠানো হয় না।’’
কিন্তু পাল্টা জবাব দিয়ে স্পিকার জানালেন কেউ আরটিআই করে ফাইল সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে তা তিনি স্পষ্টই জানিয়ে দেবেন। বৃহস্পতিহবার ১০৮টি পুরসভার ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও হাওড়া ও বালি পুরসভা বাদ গিয়েছে। যে কারণে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রাজ্যপালও কোনও ফাইল না আটকে রাখার দাবি করায় নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়। যাঁর জেরে মুখ খোলেন স্পিকার।
রাজ্য রাজনীতিতে স্পিকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সঙ্ঘাত নতুন নয়। গত বছর ডিসেম্বর মাসেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি লিখে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েছিলেন স্পিকার। তার আগে বিধানসভায় তাঁর বক্তৃতা সম্প্রচার করতে দেওয়া নিয়ে সঙ্ঘাত হয়েছিল রাজ্যপাল-স্পিকারের। রাজ্যপালের বাজেট বক্তৃতা সম্প্রচার করতে চেয়ে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছিল রাজভবন। নিজের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে রাজভবনের সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন স্পিকার। আবার পর পর দু’বার সর্বভারতীয় স্পিকারদের সম্মেলনে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে লোকসভার স্পিকারের কাছে নালিশ করেছিলেন তিনি। বেশ কয়েক বার পত্রযুদ্ধও চলেছিল দু’জনের। আবার স্পিকার হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে বিধায়ক হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করাতে দেননি রাজ্যপাল। এমন সব ঘটনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার যুক্ত হল আরও এক নতুন অধ্যায়।