ইতিমধ্যে কোভিডের কারণে অনাথ হয়ে পড়া ৬,৭৭৩ জন অপ্রাপ্তবয়স্ককে চিহ্নিত করা হয়েছে রাজ্যে। ফাইল চিত্র
কোভিডে বাবা-মা হারানো শিশু বা নাবালকদের দেখভাল করতে জরুরি অ্যাপ চালু করল রাজ্য সরকার। ‘স্নেহছায়া’ নামের অ্যাপটি নিয়ে এল রাজ্যের নারী ও শিশু উন্নয়ন এবং সমাজ কল্যাণ দফতর। ইতিমধ্যে কোভিডের কারণে অনাথ হয়ে পড়া ৬,৭৭৩ জন অপ্রাপ্তবয়স্ককে চিহ্নিত করা হয়েছে রাজ্যে। আরও খোঁজখবর চলছে। এদের যাবতীয় তথ্য রাখা হচ্ছে এই অ্যাপে।
আপাতত পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় এই অ্যাপটি পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু করা হয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে বাকি জেলাগুলিতেও অ্যাপটি চালু হয়ে যাবে। মা-বাবাকে হারানো শিশুর শারীরিক বা মানসিক অবস্থা, পড়াশোনা করছে কি না, কোনও আর্থিক সমস্যায় পড়েছে কি না, গার্হস্থ হিংসার শিকার হচ্ছে কি না, এ সব তথ্যই থাকবে এই অ্যাপটিতে। এটি মূলত একটি নজরদারি বা মনিটারিং অ্যাপ। যা দেখে সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী এবং আধিকারিকরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারবেন।
গত বছর একই পরিবারের তিন শিশুর অনাথ হয়ে পড়ার খবর পান দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা। জানতে পারেন, কোভিডে মা-বাবা প্রয়াত হওয়ার পর, আত্মীয়েরা তাদের অভিভাবকত্ব ভাগ করে নিয়েছেন। ভাই-বোনেরা আলাদা হয়ে পড়েছে। সেই থেকেই কোভিডে বা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে কোমরবিডিটির কারণে বাবা-মা মারা গেলে তাঁদের সন্তানদের দেখভাল করার উদ্যোগ শুরু হয়। জেলাভিত্তিক তথ্য সংগ্রহ শুরু হওয়ার পর এই অ্যাপটি তৈরির কথা ভাবা হয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে মন্ত্রী বলেন, “বর্তমান সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্নেহছায়া অ্যাপটি। অ্যাপের মাধ্যমেই মহামারিতে অনাথ হওয়া অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর নজর রাখতে পারব। তাদের কোনও সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।” তিনি আরও জানান, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে শিশু দিবসের সপ্তাহে, অর্থাত্ ১৪ থেকে ২১ নভেম্বরের মধ্যেই এই অ্যাপটি রাজ্য জুড়ে কাজ করা শুরু করবে।
কী ভাবে কাজ চলবে এই অ্যাপে? দফতরের এক আধিকারিক জানালেন, জেলায় জেলায় দফতরের নিচুতলার কর্মী বা আধিকারিকরা এই সব শিশু ও নাবালকদের বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত খোঁজখবর নিয়ে অ্যাপে যাবতীয় তথ্য আপলোড করবেন। সেই সব তথ্যে নজর রাখবেন মন্ত্রী ও শীর্ষ আধিকারিকরা। দরকার মতো ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেবেন। দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সবার মোবাইলে অ্যাপটি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।