হাওড়া জেলা হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
হাওড়া জেলা হাসপাতালে ১০০ শয্যার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ব্লক (সিসিবি) তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করতে চায় রাজ্য সরকার। তাই হাসপাতালে তৈরি হওয়া নতুন ভবনে ডায়ালিসিস ইউনিট ও অক্সিজেন ইউনিটের জন্য নতুন মেশিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর অবিলম্বে সরবরাহ করবে। এর পরেই ভেঙে ফেলা হবে বর্তমানে ডায়ালিসিস ইউনিট যে বাড়িটিতে রয়েছে, সেই পুরনো ভবনটি। প্রসঙ্গত, ওই বাড়িটি ভাঙতে না পারার জন্যই মাঝপথে থমকে গিয়েছে সিসিবি তৈরির কাজ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শুক্রবার আচমকা হাওড়া জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া জেলা হাসপাতালে ১০০ শয্যার সিসিবি তৈরি হচ্ছে। এটি তৈরি হয়ে গেলে হাওড়ার রোগীদের আর কলকাতায় ছুটতে হবে না। কমবে রেফার করার ঘটনাও। সিসিবি তৈরির কাজ কত দূর এগিয়েছে, আমি সেটাই দেখতে এসেছিলাম।’’ শুরু হয়েও মাঝপথে কাজ কেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, সেই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যসচিব অবশ্য বলেন, ‘‘কাজ তো বন্ধ হয়নি। হাসপাতালের পরিষেবা চালু রেখে কাজ করতে হচ্ছে। তাই একটু সমস্যা তো হবেই।’’
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের সুস্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় গত বছরের মার্চে রাজ্যের কয়েকটি জেলায় ‘ইন্টিগ্রেটেড পাবলিক হেল্থ ল্যাবরেটরি’ (ডিআইপিএইচএল) এবং ১০০ শয্যার ২২টি সিসিবি তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন এসেছিল। এর পরেই সব জেলা হাসপাতালে ১০০ শয্যার সিসিবি এবং ডিআইপিএইচএল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেই মতো শুরু হয় জায়গার খোঁজ। নানা জটিলতা কাটিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতাল চত্বরে শুরু হয় সিসিবি তৈরির কাজ। কিন্তু, কয়েক মাস কাজ হওয়ার পরেই এক দিকে অর্থাভাব এবং অন্য দিকে প্রকল্প এলাকার মধ্যে থাকা ডায়ালিসিস ইউনিট ও অক্সিজেন ইউনিটের পুরনো বাড়িটি না ভাঙতে পারার কারণে সেই কাজ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই স্বাস্থ্যসচিবকে সমস্যা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ দফতরের কর্তাদের নিয়ে হাওড়া জেলা হাসপাতালে আসেন স্বাস্থ্যসচিব। সঙ্গে ছিলেন হাওড়ার জেলাশাসক পি দীপপ প্রিয়া ও নগরপাল প্রবীণ ত্রিপাঠী। এ দিকে, স্বাস্থ্যসচিব আসছেন খবর পেয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতালে পৌঁছে যান সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কিশলয় দত্ত।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছে স্বাস্থ্যসচিব জানতে চান, সিসিবি নির্মাণে কোথায় সমস্যা হচ্ছে? আধিকারিকেরা জানান, ডায়ালিসিস এবং অক্সিজেন ইউনিট যে বাড়িতে রয়েছে, সেখান থেকে ওই দু’টি ইউনিট বিকল্প জায়গায় না সরালে বাড়িটি ভাঙা যাচ্ছে না। তখনই স্বাস্থ্যসচিব জানিয়ে দেন, নতুন ভবনে ওই দু’টি ইউনিট স্থানান্তরিত হওয়ার পরে নতুন যন্ত্র সরবরাহ করবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরই। তা হলে আর সমস্যা থাকবে না।