সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
রাজভবনে কর্মরত অস্থায়ী কর্মীদের কাজের পর্যালোচনা শুরু করা হল। ২ মে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী। ওই দিন রাতে হেয়ার স্ট্রিট থানায় এই সংক্রান্ত বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানান অভিযোগকারী যুবতী। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়। আর তার পরেই অস্থায়ী কর্মীদের কাজের পর্যালোচনা শুরু হয়েছে রাজভবনে। বর্তমানে রাজভবনে প্রায় ৪০ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। মূলত তাঁদের কাজ এবং রাজভবনে তাঁদের ভূমিকা এখন রাজ্যপালের আতশকাচের তলায়। রাজভবন সূত্রের খবর, কোন কর্মচারী রাজভবনের কোন বিভাগে কাজ করেন, কত ক্ষণ তাঁরা রাজভবনে থাকেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। অস্থায়ী কর্মীদের নিয়ে তৈরি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা পড়বে রাজ্যপালের কাছে। তবে সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা এখনও জানা যায়নি।
ইতিমধ্যে শ্লীলতাহানির ঘটনার তদন্তে কলকাতা পুলিশের একটি তদন্তকারী দল দু’বার রাজভবনে এসে তদন্ত করে গিয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে রাজভবনের ছ’জন কর্মচারীকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে নোটিস ধরানো হয়েছে। পুলিশের এমন ভূমিকায় রাজভবন এখনও কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি। তবে অস্থায়ী কর্মীরা আশঙ্কা করছেন কর্মহীন হওয়ার। কারণ, যে ভাবে তড়িঘড়ি তাঁদের কাজের মূল্যায়ন শুরু হয়েছে, তাতেই আশঙ্কার মেঘ দেখছেন তাঁরা। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে রাজভবনে থাকলেও রাজ্যপাল বোস কখনওই অস্থায়ী কর্মীদের কাজের পর্যালোচনা বা মূল্যায়ন কোনওটাই করেননি। কিন্তু ‘পিস রুম’-এ ইপিবিএক্স-এ কর্মরত এক অস্থায়ী মহিলা কর্মী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পরেই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। রাজভবনের অস্থায়ী কর্মীদের মূল্যায়নের বিষয়টি জানতে পেরেছে নবান্ন। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রক্রিয়ায় নজর রয়েছে প্রশাসনের শীর্ষ মহলের।
অন্য দিকে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে রাজ্যপালকে রাজভবনের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। বুধবার রাজভবন জানিয়েছে, সেই সিসিটিভি ফুটেজ তারা প্রকাশ করবে। তবে সবার জন্য নয়। রাজভবনের জারি করা বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও নাগরিক ওই সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে পারবেন। পারবেন না শুধু দুই পক্ষ— এক রাজনীতিবিদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দুই তাঁর পুলিশ।’’ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের পর যে ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে শাসকদল, তার জবাব দিতেই একের পর এক পদক্ষেপ করছেন রাজ্যপাল বোস। এমনটাই মনে করছেন বাংলার রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।