ফাইল চিত্র।
রুজিরা নারুলার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক উড়ানে বিধি বহির্ভূত ভাবে সোনা আনার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা ফের উঠতে চলেছে সুপ্রিম কোর্টে।
২০১৯ সালের মার্চে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরার বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতার উড়ানে বিধি ভেঙে সোনা আনার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় রুজিরাকে প্রথমে শুল্ক দফতর সমন পাঠিয়েছিল। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্ট সেই সমন খারিজ করে দেয়। তখনই হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল শুল্ক দফতর। কিন্তু গত তিন বছরে এই মামলার আর শুনানি হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের মামলার তালিকা অনুযায়ী, ৫ সেপ্টেম্বর তার শুনানি হওয়ার কথা।
স্কুলে নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতারের পরে যখন তাঁর ‘ঘনিষ্ঠের’ বাড়িতে ইডি-র তল্লাশিতে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে, ঠিক তখনই নতুন করে রুজিরা-মামলার ‘ভেসে ওঠা’ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। বিশেষত যেখানে মাঝের তিন বছরে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বেআইনি কয়লা পাচার মামলাতেও অভিষেকের পাশাপাশি রুজিরার ভূমিকা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
২০১৯-এর মার্চে রুজিরা ও তাঁর বোন মেনকা গম্ভীরের বিরুদ্ধে ব্যাঙ্কক থেকে কলকাতায় ফেরার সময়ে বেআইনি ভাবে সোনা নিয়ে আসার অভিযোগ ওঠায় তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। রুজিরার পাল্টা দাবি ছিল, তিনি কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পরে শুল্ক দফতরের কর্মীরা ঘুষ চেয়েছিলেন। তিনি তা দিতে অস্বীকার করলে, জিনিসপত্র তল্লাশি করা হয়। কিন্তু কিছু মেলেনি। শুল্ক কর্মীদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় রুজিরা অভিযোগও দায়ের করেছিলেন।
এই ঘটনার পরে কলকাতায় শুল্ক দফতরের স্ট্র্যান্ড রোডের দফতরে রুজিরাকে তলব করে সমন পাঠানো হয়েছিল। রুজিরা তার বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। প্রথমে এক বিচারপতির বেঞ্চ, তার পরে ডিভিশন বেঞ্চ সমনে স্থগিতাদেশ জারি করে। পরে হাই কোর্ট সমন খারিজ করে দেয়। তখন শুল্ক দফতরের তরফে কেন্দ্রীয় পরোক্ষ কর ও শুল্ক পর্ষদের সদস্য (শুল্ক) রাজকুমার বর্থওয়াল সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন। শুল্ক দফতর সূত্রে বক্তব্য, বিমানবন্দরে যে কারও ব্যাগ তল্লাশির অধিকার শুল্ক আধিকারিকদের রয়েছে। কোনও বিষয়ে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদেরও আইনি অধিকার রয়েছে তাঁদের।
এই মামলায় রুজিরা, মেনকা ছাড়াও রাজ্য পুলিশের ডিজি, বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার ও কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের রাজস্ব সচিবকে অংশীদার করা হয়। তিন বছর আগে ২০১৯-এর ১২ এপ্রিল তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছিল। আদালত সব পক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করে। তার পরে আর শুনানি হয়নি। কেন্দ্রের আইনজীবীরা বলছেন, সব ঠিক থাকলে ৫ সেপ্টেম্বর শুনানি হবে।