বাবুল সুপ্রিয়। ফাইল চিত্র
নাম, ‘টিম বাবুল’। আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের নির্দেশেই এই ‘টিম’ কাজ করে বলে দাবি সেই দলের সদস্যদের। তবে, ওই দলের কাজকর্ম ‘দলীয় কর্মসূচি’ নয় বলে একাধিকবার মন্তব্য করেছেন বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি এবং টিম বাবুলের মধ্যে কতখানি সমন্বয় রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে।
সমন্বয়ের অভাব আদৌ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য বাবুলকে ফোন করা হলে তিনি ‘ব্যস্ত আছি’ জানান। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত উত্তর দেননি হোয়াটস অ্যাপ বার্তারও। তবে, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু এ দিন আসানসোলে সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, ‘‘বিষয়টা শুনেছি। তবে এটা এমন কিছু গুরুতর বিষয় নয় যে আলোচনা করে মেটানো যাবে না। আমরা উপযুক্ত পদক্ষেপ করছি।’’
বিজেপি সূত্রে জানা যায়, ‘লকডাউন-পর্বে’ ত্রাণ বিলি, রেশন কার্ড নিয়ে আন্দোলন-সহ নানা কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে ‘টিম বাবুল’-কে। সম্প্রতি জেলার আটটি ব্লক ও একটি পুরসভায় ওই টিম অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আধিকারিকদের দুঃস্থ নাগরিকদের নামের তালিকা তুলে দেয়। বারাবনি, সালানপুর, রানিগঞ্জ-সহ জেলার কিছু এলাকায় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে তৃণমূল ও পুলিশের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়া ও হামলা চালানোর অভিযোগ করেন ওই টিমের সদস্যেরা। যদিও, তৃণমূল ও পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই সমস্ত ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি লক্ষ্মণবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এগুলির একটিও বিজেপির দলীয় কর্মসূচি নয়।’’
অথচ, এই টিমে রয়েছেন দলেরই প্রাক্তন পদাধিকারী, দলের যুব সংগঠন ‘ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা’র সদস্যেরা। তার পরেও লক্ষ্মণবাবু ওই সমস্ত ‘অশান্তি’র পরে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। এই পরিস্থিতিতেই বিজেপির স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশের মধ্যে জল্পনা, দল ও টিম বাবুলের মধ্যে কতটা সমন্বয় রয়েছে। তাঁদের কর্মসূচি দলীয় নয় জানিয়েও টিমের অন্যতম সদস্য, বিজেপির প্রাক্তন জেলা সহ-সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘সমন্বয়ের কোনও অভাবই নেই। আমরা যে বিজেপির নেতা, কর্মী— তা সবাই জানেন। দলীয় নেতৃত্বও জানেন।’’ কিন্তু এর পরেই তাঁর সংযোজন: ‘‘সাংসদই ‘টিম বাবুল’ নাম দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশ মতোই আমরা কাজ করছি।’’
যদিও, এই ‘টিম’-এর মধ্যে ‘অস্বাভাবিক’ কিছু দেখছেন না বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি তথা বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘সংসদীয় এলাকায় নিজের (সাংসদের) কাজকর্মের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আলাদা করে ‘টিম’ তৈরি করা যেতেই পারে।’’ পাশাপাশি, তিনি এ-ও বলেন, ‘‘ওই দলটি অবশ্যই বিজেপির আঞ্চলিক কমিটির সঙ্গে বোঝাপড়া বজায় রেখেই কাজ করবে। আসানসোলে যদি সেটার অভাব ঘটে থাকে, দ্রুত বসে তা মিটিয়ে ফেলা উচিত।’’