মাত্র চার দিনের ব্যবধানে লিটারে ৩ পয়সা দাম বাড়ল কেরোসিন তেলের। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ফের দাম বাড়ল কেরোসিন তেলের। চলতি জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেই দু’দফায় কেরোসিন তেলের দাম বাড়ানো হল। জুলাই মাসের ১ তারিখেই কেরোসিন তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। ওই দিন লিটার পিছু ১২ পয়সা করে দাম বাড়ানো হয়েছিল। ৪ তারিখে আবারও ১৮ পয়সা দাম বাড়ানো হয়েছে। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে লিটারে ৩ পয়সা দাম বাড়ল কেরোসিন তেলের। কলকাতা শহরে কেরোসিন তেলের মূল্য ছিল লিটার পিছু ৬০ টাকা ৬ পয়সা। জেলায় যাতায়াত খরচ ও ডিলারদের কমিশন বাবদ আরও কিছু কর সংক্রান্ত বিষয় যুক্ত হয়ে কেরোসিন তেলের দাম নির্ধারিত হয়। শনিবার প্রথম দফায় লিটার পিছু দামের সঙ্গে ১২ পয়সা অতিরিক্ত যুক্ত হয়েছিল। মঙ্গলবার যুক্ত হয়েছে আরও ১৮ পয়সা। তাই ৪ দিনের ব্যবধানে কেরোসিন তেলের দান ৩০ পয়সা বাড়ল।
২০২২ সালে জানুয়ারি মাস থেকে অস্বাভাবিক হারে কেরোসিন তেলের দাম বাড়তে শুরু করেছিল। গত বছর জুলাই মাসে কেরোসিন তেলের দাম লিটার কিছু ১০০ টাকা পেরিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় সাধারণ মানুষ তো বটেই রেশন ডিলার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চেপে ধরেছিল। ফলস্বরূপ অগস্ট মাস থেকে কমতে শুরু করে কেরোসিন তেলের দাম। কিন্তু ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে আবারও কেরোসিন তেলের দাম ঊর্ধ্বগামী। তাই এমন পরিস্থিতিতে আবারও তেলের দাম গরিব মানুষের আয়ত্তের বাইরে যেতে পারে বলেই মত রেশন ডিলারদের একাংশের।আশঙ্কা, আবারও কেরোসিন তেলের দাম সেঞ্চুরির গন্ডি পেরিয়ে যেতে পারে।
কেরোসিন তেলের দাম এ ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায়, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের সিদ্ধান্তের কারণ খুঁজতে শুরু করেছেন কেরোসিন তেল ডিলাররা। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সেখানে চার দিনের ব্যবধানে কেরোসিন তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত কী ভাবে নিতে পারে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক? কেরোসিন তেল ডিলারদের বক্তব্য, দেশের বড় অংশের মানুষ এখনও রান্নার কাজে কেরোসিন তেলের ব্যবহার করেন। যাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই, রাতের বেলায় কেরোসিন তেলই তাঁদের ঘরের আলোর একমাত্র উৎস। তাই দাম বাড়ানোর আগে নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে তাঁদের কথা ভাবা উচিত ছিল।
কেরোসিন তেলের দাম বৃদ্ধির এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ওয়েস্ট বেঙ্গল কেরোসিন ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন। তাদের তরফে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত বলেন, ‘‘কোনও কারণ না জানিয়ে জুলাই মাসের ১ ও ৪ তারিখে একতরফা ভাবে কেরোসিন তেলের দাম বাড়ানো হল। দেশের এখনও বিরাট অংশের গরিব মানুষ কেরোসিন তেলের ,পর নির্ভরশীল। তাঁদের ঘরে রাতে আলো জ্বালানোর জন্যই হোক বা রান্না করে খাওয়া হোক, সবেতেই কেরোসিন তেল একমাত্র অবলম্বন। গত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের মনে হচ্ছে, কেরোসিন তেলের দাম এ বছর শেষ হতে হতে অনেকটাই বেড়ে যাবে।’’ কেরোসিন তেল ডিলারদের সংগঠনটি জানিয়েছে, আগামী দিনে যদি এ ভাবেই কেরোসিন তেলের দাম বাড়তে থাকে, তবে তাঁরা দিল্লিতে বড়সড় আন্দোলনের পথে নামবেন।