ভোটের প্রয়োজনে কলকাতা শহরে চলাচল করা দেড় হাজার বাস ভাড়া নিয়েছে কমিশন। — ফাইল চিত্র।
৮ জুলাই শনিবার পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট। সেই কারণে বেসরকারি বাণিজ্যিক গাড়ি ভাড়া নেওয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকায় যেমন রয়েছে বেসরকারি বাস, তেমনি রয়েছে পুলকারও। পুলিশ এবং প্রশাসনের পাশাপাশি, মোটর ভেহিকলসের আধিকারিকেরা বেসরকারি বাণিজ্যিক গাড়ি ভাড়া নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করেছেন। এ ক্ষেত্রে ‘হুকুম দখল’ পদ্ধতিতে নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে গাড়িগুলিকে ভাড়া নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এর ফলে রাস্তায় কমে গিয়েছে বেসরকারি বাসের সংখ্যা। যা সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে গণপরিবহণ পরিষেবায়, এমনটাই দাবি বেসরকারি বাসমালিকদের। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে দৈনিক গড়ে ২৬ হাজার বাস চলে। তার মধ্যে বড় সংখ্যক বাস জেলা থেকে আগেই তুলে নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি আবার কলকাতায় চলাচল করা বেসরকারি বাসগুলিকে ভাড়া নেওয়া কাজ শুরু হয়েছে। প্রতি দিন গড়ে কলকাতা শহরে সাড়ে চার হাজার বাস চলাচল করে। কিন্তু ভোটের প্রয়োজনে কলকাতা শহরে চলাচল করা দেড় হাজার বাস ভাড়া নিয়েছে কমিশন।
অন্য দিকে, পুলকারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পুলকার মালিকদের। পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত জানিয়েছেন, কলকাতা এবং শহরতলি জুড়ে রেজিস্টার সাড়ে ৩ হাজার পুলকার চলাচল করে। কিন্তু ভোটের কারণে দেড় হাজারের বেশি গাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। তাই তারা এই সময় ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি থেকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার পরিষেবা দিতে পারছেন না। তাই অভিভাবকদের কাছে পুলকার মালিকদের অনুরোধ, এই সময়ে তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করা হয়। আগামী সপ্তাহ থেকে আবারও তারা স্বাভাবিক নিয়মেই ছাত্রছাত্রীদের পুলকার পরিষেবা দেবেন। উল্লেখ্য, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসে থাকা দুটি বেসরকারি নামজাদা স্কুল পুলকারের অভাবে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার স্কুলে ছুটি দিয়ে দিয়েছে। দক্ষিণ কলকাতার আরও একটি স্কুলে আবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে অভিভাবকদের জানিয়েছে, এই সময় তারা পুলকার পরিষেবা দিতে পারবেন না। তাই ব্যক্তিগত উদ্যোগেই যেন ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে পাঠানো হয়।
অন্য দিকে, সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেন, “একে তো পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য বাস ভাড়া নেওয়ায় রাস্তায় বাস কমে গেছে। তার উপরে আবার নতুন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ভোটের কাজে আসবেন। আমাদের আশঙ্কা তাদের মোতায়ন করার জন্য আবারও নতুন করে ‘হুকুম দখল’ করে বাস ভাড়া নেওয়া হতে পারে। এমনটা হলে সপ্তাহ জুড়ে রাস্তায় বেসরকারি বাসের আকাল দেখা দিতে পারে।” একটি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠন তাদের অসুবিধার কথা পরিবহণ দফতরকে জানিয়েছিল। সূত্রের খবর, পরিবহণ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে এই সব কিছুই হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে। তাই তারা চাইলেও এ বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।