শান্তনু ঠাকুর। —ফাইল চিত্র।
সিএএ চালু করা নিয়ে শান্তনু ঠাকুর যা বলেছিলেন, বা তার এক সপ্তাহ পরে তার থেকে পিছু হটার যে ঘোষণা করেছেন, তা নিয়ে আপাত ভাবে হেলদোল নেই বনগাঁর মতুয়াদের মধ্যে। মতুয়া ভক্তদের অনেকেরই দাবি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আগেও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা মতুয়া নেতা শান্তনু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তাই এখন তাঁর আশ্বাসকে আর তাঁরা গুরুত্ব দিতে চান না।
গত ২৮ জানুয়ারি ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে শান্তনু ঠাকুর দাবি করেছিলেন, আগামী সাত দিনের মধ্যেই সিএএ কার্যকর হয়ে যাবে। তার পরে পেরিয়ে গিয়েছে এক সপ্তাহেরও বেশি সময়। কিন্তু সিএএ এখনও কার্যকর হয়নি। এ বারে সুর বদলে শান্তনুর দাবি, সিএএ-র এর ‘রুল ফ্রেম’-এর কাজ প্রায় শেষ। কয়েক মাসের মধ্যেই তা কার্যকর হবে। শনিবার বাগদার কুঠিবাড়ি এলাকায় এক অনুষ্ঠানে শান্তনু বলেন, ‘‘আমি বলতে চেয়েছিলাম, ৭ দিনের মধ্যে সিএএ-এর রুল ফ্রেম হয়ে যাবে। মুখ ফস্কে সিএএ কার্যকর হবে বলে ফেলেছিলাম।’’ তার পরেই তাঁর আশ্বাস, খুব শীঘ্রই সিএএ চালু হবে।
সাধারণ মতুয়া ভক্তদের একাংশের দাবি, প্রতিশ্রুতি নয়, তাঁরা এখন নাগরিকত্ব পেতে চান। মতুয়াভক্ত কিঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘এনআরসি-সিএএ নিয়ে সাধারণ মতুয়ারা সংশয়ে। কিছু মতুয়া ভাবছেন, সিএএ হলে লাভ হবে। আবার কিছু মতুয়া ভাবছেন, লাভ হবে না। আশাহত হতে হতে মতুয়াদের এখন আর কিছুই মনে হয় না।’’ বাগদার মতুয়াভক্ত অনুপম বিশ্বাসের কথায়, ‘‘২০১৯ সালে যে সিএএ হয়েছে, তা পরিবর্তন করতে হবে। কারণ, তাতে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা নেই। নথিপত্র দিয়ে আবেদনের ভিত্তিতে আমরা নাগরিকত্ব চাই না। ফলে, এই সিএএ কার্যকর হওয়া নিয়ে আগ্রহ নেই।’’
সিএএ প্রসঙ্গে তৃণমূল বরাবরই বলে আসছে, মতুয়ারা যখন ভোট দেন, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড আছে, তখন তাঁদের নতুন করে নাগরিকত্ব নেওয়ার দরকার নেই। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর বলেন, ‘‘সিএএ কার্যকর করা নিয়ে এত বড় মিথ্যে কথা মুখ ফস্কে বেরোতে পারে না। শান্তনু ঠাকুর মতুয়া ধর্ম, মতুয়া সমাজের মানুষকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। ওঁর প্রতি মতুয়াদের বিশ্বাস, ভরসা সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার শান্তনুকে মিথ্যে কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছে। তাই ভাঁওতা দিয়ে যাচ্ছে।’’