ফাহিম আখতার, ফাজ়িলে প্রথম, হুগলি, সুজাউদ্দিন লস্কর, আলিমে প্রথম, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, আশিক ইকবাল, হাই মাদ্রাসায় প্রথম, মুর্শিদাবাদ। ফাইল ছবি।
মাধ্যমিক, আইসিএসই এবং সিবিএসই-র দশম শ্রেণির পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় এ বার পাশের হার কমেছে। কিন্তু শনিবার প্রকাশিত রাজ্যের মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম, ফাজ়িল এবং হাই মাদ্রাসা বোর্ডের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরে দেখা গিয়েছে, তিনটি পরীক্ষাতেই পাশের হার আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। হাই মাদ্রাসায় (মাধ্যমিক সমতুল) ২০২২ সালে পাশের হার ছিল ৮৭.০২ শতাংশ। এ বার পাশের হার ৮৮.০৯ শতাংশ। আলিমে (মাধ্যমিক সমতুল) গত বছর পাশের হার ছিল ৮৯.৮৭ শতাংশ। এবার ৯০.৬৯ শতাংশ। ফাজ়িলে (উচ্চ মাধ্যমিকের সমতুল) গত বার পাশের হার ছিল ৯০.৬৮ শতাংশ। এ বার ৯১.১৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করেছেন।
মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের এই তিনটি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৫৩,৫৬৫ জন। তার মধ্যে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের সংখ্যা ছিল দ্বিগুণ। তবে ছাত্রীদের পাশের হার ছাত্রদের তুলনায় সামান্য কম। হাই মাদ্রাসায় পাশের হার সব থেকে বেশি পূর্ব মেদিনীপুরে (৯৮.০৭ শতাংশ)। আলিমে পাশের হারে শীর্ষে কোচবিহার (৯৬.৩০ শতাংশ) এবং ফাজ়িলেও শীর্ষে কোচবিহার (১০০ শতাংশ)।
ফাজ়িল পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম হয়েছেন ফুরফুরা ফাতেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্র ফাহিম আখতার (প্রাপ্ত নম্বর ৫৬৫)। তিনি আরবি নিয়ে পড়তে চান। বাবা নাসিম আখতার রেলকর্মী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ফাহিমকে। টুইট করে উত্তীর্ণ সব পরীক্ষার্থীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। ফাজ়িলে পূর্ব বর্ধমানের মোজাম্মেল মল্লিক ৫৫১ পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। ৫৪৯ পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন উত্তর চব্বিশ পরগনার ইজাজ আহমেদ মণ্ডল। হাই মাদ্রাসায় প্রথম হয়েছে মুর্শিদাবাদের আশিক ইকবাল (প্রাপ্ত নম্বর ৭৮০)। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় যথাক্রমে মুর্শিদাবাদের নাসিরউদ্দিন মোল্লা এবং মালদহের মহম্মদ মোক্তাদুর রহমান। আলিমে প্রথম হয়েছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মহম্মদ সুজাউদ্দিন লস্কর (প্রাপ্ত নম্বর ৮৪৫)। দ্বিতীয় স্থানে আছে উত্তর ২৪ পরগনার করিমুল ইসলাম মণ্ডল এবং মুর্শিদাবাদের আব্দুল হালিম। তৃতীয় মুর্শিদাবাদের আব্দুর রহমান। তিনটি পরীক্ষা মিলিয়ে মেধা তালিকায় মোট ৩৭ জন স্থান পেয়েছে।
পাশের হার বৃদ্ধি নিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিনের বক্তব্য, “অতিমারির সময়ে পড়াশোনার যে খামতি দেখা দিয়েছিল তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছি আমরা। গ্রুপ তৈরি করে কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। কেউ পড়াশোনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে কি না তা বাড়িতে গিয়ে দেখা হয়েছে। বিজ্ঞান, ইংরেজি ও অঙ্কের উপরে জোর দিয়ে বিশেষ ক্লাস হয়েছে। তার ফলেই পাশের হার বেড়েছে।” তিনি জানান, আগামী বছর হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজ়িল ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই হবে। শীঘ্রই পরীক্ষাসূচি প্রকাশিত হবে।