ভোটের ফল প্রকাশের পরে সাগরদিঘিতে তৃণমূলের দফতর। — ফাইল চিত্র।
সাগরদিঘিতে দলের ‘বিপর্যয়’ নিয়ে ডাকা জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের বৈঠক পিছিয়ে গেল। শনিবার জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের তরফে একটি বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে পিছিয়ে গিয়েছে বলেই জানিয়েছেন সাংসদ তথা জঙ্গিপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি খলিলুর রহমান।
বৈঠক পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হিসাবে খলিলুর জানিয়েছেন, শনিবার বিধানসভায় অধিবেশন ছিল। সে কারণে এলাকার বিধায়কেরা সকলেই কলকাতায় রয়েছেন। তাই বৈঠক এক সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী শনিবার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শেষ হয়ে যাবে। তার পর বিধায়কদের একত্রে জেলাতেই পাওয়া সম্ভব হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সাগরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের বিপর্যয়ের পরেই নড়েচড়ে বসে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। জঙ্গিপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব সমালোচনার মুখে পড়েছে। ২ মার্চ ফলপ্রকাশের পর দিনই ৩ মার্চ বৈঠকে বসে হারের কারণ জানতে উদ্যোগী হয়েছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি খলিলুর। ওই বৈঠকে কয়েক জন বিধায়ক হারের কারণ বিশ্লেষণ করে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন। কিন্তু জেলা তৃণমূল সভাপতি মনে করছেন, সাগরদিঘি নিয়ে কোনও স্পষ্ট মত তৈরির আগে আরও এক বার বৈঠক করতে। তাই ওই বৈঠকের ডাক দিয়েছেন সাংসদ খলিলুর।
তৃণমূল প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরাজয়ের পর থেকেই তৃণমূল শিবির অভিযোগ করে আসছে, সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বিরোধী কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং বিজেপি একযোগে জোট করে শাসকদলের প্রার্থীকে হারিয়েছেন। ২ মার্চ ফল প্রকাশের দিনেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এই অভিযোগ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলা নেতৃত্ব কারণ অনুসন্ধান করবে তো বটেই, পাশাপাশি, সাগরদিঘির হারের কারণ জানতে একটি কমিটি গড়ে রিপোর্ট জমা করতেও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। গত সোমবার বিধানসভায় নিজের ঘরে মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর ঘরে বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী জাভেদ খান, সেচ প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান ও সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানীকে ডেকে এই দায়িত্ব দেন। ইতিমধ্যে সেই কমিটি বৃহস্পতি ও শুক্রবার বৈঠক করে হারের কারণ প্রসঙ্গে ২৫টি কারণ খুঁজে বের করেছেন বলেই সূত্রের খবর। সিদ্দিকুল্লাকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দিয়েছেন কমিটির বাকি সদস্যেরা। আগামী সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই রিপোর্ট জমা দেবেন সিদ্দিকুল্লাহ।