—প্রতীকী ছবি।
হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টে। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১২ জানুয়ারি। আপাতত এইটুকু হাতে নিয়েই দিল্লি থেকে ফিরছেন কামদুনি গণধর্ষণ কাণ্ডে নিহত ছাত্রীর মা। তবে জানিয়ে দিচ্ছেন, ১২ জানুয়ারি শুনানির দিন ছেলেকে নিয়ে হাজির থাকবেন সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দফতরেও যান মা ও ছেলে। সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে ট্রেনে বাড়ি ফেরার পথে মা বলেন, ‘‘এতগুলো বছর ধরে তো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী সবার কাছে একটাই আর্জি জানিয়ে আসছি। আমার মেয়ের মৃত্যুর সুবিচার চাই। আর তো কিছু নয়!’’
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে কামদুনি হত্যাকাণ্ড মামলার শুনানির জন্য দিল্লি গিয়েছিলেন মৃতার মা, দাদা, এক ভাই। তাঁদের করা মামলাটি রাজ্যের করা মামলার সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে সব পক্ষকে নোটিসও দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১২ তারিখে। মঙ্গলবার মৃতার পরিবার-পরিজনেরা অভিযোগ করেন, রাজ্যের কোনও আইনজীবী আদালতে ছিলেন না। যদিও আইনজীবী মহল সূত্রে বলা হয়, মৃতার পরিবারের করা মামলাটির প্রথম শুনানি ছিল মঙ্গলবার। তাই সেখানে অন্য পক্ষের থাকার কথাও নয়। এ দিন অবশ্য মৃতার মা, দাদা বা তাঁদের সঙ্গী তথা কামদুনির বধূ মৌসুমী কয়াল এবং মৃত ছাত্রীটির মাস্টারমশাই প্রদীপ মুখোপাধ্যায়— কেউই এই নিয়ে মুখ খোলেননি। মৃতার বাবার শরীর খারাপ। বাড়িতে এক প্রকার শয্যাশায়ীই। তাঁকে আগলে রয়েছেন মৃতার ছোট ভাই। সেই ভাই বলেন, ‘‘দিদি মারা যাওয়ার পর থেকে আমাদের পরিবারে উপর দিয়ে যে কী যাচ্ছে, তা একমাত্র ভগবানই জানেন। মাঝে মাঝে এত রাগ হয়!’’
যেখানে মেয়েটির উপর অত্যাচার করে খুন করা হয়েছিল, সেই পরিত্যক্ত জায়গাটি দিয়ে গেলেই রোষে পাঁচিলে লাথি-ঘুসি মেরে হাত-পা ফাটিয়ে আসে ছেলে— বলছিলেন মৃতার বাবা। দিল্লি থেকে এ দিন মৃতার দাদা বলেন, ‘‘বাবা-মা কারও শরীর ভাল না। ১১টা বছর দিন-রাত লড়াই চলছে। আমাদের রাজ্যে সুবিচার পাইনি। তাই এত দূর ছুটে আসা। এমন মৃত্যু আসলে পরিবারকেও শেষ করে দেয়।’’ মায়ের কথায়, ‘‘আমার মেয়ের আত্মার শান্তি হয়নি। ওকে যারা ওই ভাবে খুন করেছে, তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে সেই আবেদন জানিয়েছি।’’ কেন শুধু পরিবার, মৌসুমী বলেন, ‘‘ঘটনার দিন থেকে আমাদেরও ঘুম, সংসার কিছুই নেই। কত জায়গায় ওদের নিয়ে ছুটলাম। আরও কত দিন লড়াই চলবে জানি না। আমাদের পাশে কেউ থাকুক না থাকুক, আমরা ওর মা-ভাইদের সঙ্গে আগের মতোই আছি।’’ এ বার পরের শুনানির অপেক্ষা।