প্রতীকী ছবি।
মোদী সরকার বলছে, আমজনতাকে সুরাহা দিতে পেট্রল-ডিজ়েলে উৎপাদন শুল্ক কমিয়েছে তারা। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন হিসাব কষে দেখাচ্ছেন, কী ভাবে এতে দাম কমবে জ্বালানির। রাজ্যগুলিকে ভ্যাট কমিয়ে সুবিধার বহর আরও বাড়ানোর বার্তাও দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু এই সবের মধ্যেই অভিযোগ, গত শনিবার উৎপাদন শুল্ক কমলেও পেট্রলে তার পুরো সুফল সাধারণ মানুষের দরজায় পৌঁছয়নি। কারণ, ওই দিনই রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি পেট্রলের মূল দাম বাড়িয়েছে। যার উপরে কেন্দ্রের শুল্ক, রাজ্যের ভ্যাট এবং ডিলারদের কমিশন বসে জ্বালানির পাম্পে বিক্রির দাম স্থির হয়। তেলের বিপুল দরের তুলনায় সরকারের পেট্রলে লিটার পিছু ৮ টাকা এবং ডিজ়েলে ৬ টাকা উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তকে গোড়া থেকেই ‘আমজনতাকে বোকা বানানোর চেষ্টা’ বলে বিঁধছেন বিরোধীরা। এই অবস্থায় পেট্রলে মূল দাম বৃদ্ধির বিষয়টি তাদের অস্বস্তি বাড়াল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
পশ্চিমবঙ্গের ডিলারমহল সূত্রের খবর, কলকাতায় পেট্রলের মূল দাম রবিবার থেকে লিটারে ৭৯ পয়সা বেড়েছে। ফলে কেন্দ্র শুল্ক ছাঁটার আগে তা ৬১.৩২ টাকা থাকলেও, এখন হয়েছে ৬২.১১ টাকা। শুল্ক কমার ফলে যতটা কম দামে ক্রেতাদের জ্বালানিটি পাওয়ার কথা ছিল, পাচ্ছেন না। তবে অতি সামান্য হলেও কমেছে ডিজ়েলের মূল দাম। কলকাতায় আগে তার দাম ছিল লিটারে ৬১.৬০ টাকা। এখন হয়েছে লিটারে ৬১.৫৭ টাকা। কমেছে ডিলারদের কমিশনও। পেট্রলে ৩.৬০ টাকা থেকে কমে সেটা হয়েছে ৩.৫২ টাকা। ডিজ়েলে ২.২৫ টাকা থেকে কমে হয়েছে ২.২৪ টাকা। আজ, মঙ্গলবারও কলকাতার পাম্পে তেলের দাম অপরিবর্তিত। পেট্রল লিটার পিছু ১০৬.০৩ টাকা আর ডিজ়েল ৯২.৭৬ টাকা।
শুল্ক কমানো-বাড়ানোর সময়ে তেলের মূল দামের ওঠাপড়া আগেও ঘটেছে। যদিও কেন্দ্রের দাবি, বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের সঙ্গে তাল মিলিয়েই তা স্থির করে তেল সংস্থাগুলি। বিরোধীদের অভিযোগ, আর্থিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া তেল সংস্থাগুলি কী ভাবে সিদ্ধান্ত নেবে? যেখানে জ্বালানির চড়া দরে দেশ নাজেহাল এবং শুল্ক কমলে কিছুটা রেহাই মেলে, সেখানে সামান্য হলেও মূল দাম বাড়িয়ে ক্রেতার সেই যৎসামান্য লাভের অঙ্ক ছাঁটাই করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নয়াদিল্লির সবুজ সঙ্কেত ছাড়া বাস্তবায়িত হওয়া কার্যত অসম্ভব।
কেরলের অর্থমন্ত্রী কে এন বালগোপালের দাবি, কেন্দ্রের ৮ টাকা এবং রাজ্যের কর ২.৪১ টাকা কমায় মোট ১০.৪১ টাকা দাম কমার কথা ছিল পেট্রলের। কিন্তু বাস্তবে কমেছে ৯.৪০ টাকা। মূল দামের বৃদ্ধিই সেই সুবিধার পথ আটকাল। বিশেষত যেখানে শুল্ক ছাঁটাইও যতটা হওয়া উচিত ছিল ততটা হয়নি।