গ্রাফিক: সনৎ সিংহ
অবশেষ তৃণমূলের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে তুলে নেওয়া হল বিতর্কিত প্রথম প্রার্থী তালিকা। রবিবার সকালে বাংলার শাসকদলের ফেসবুক পেজ থেকে তুলে নেওয়া হয় ওই তালিকাটি। ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, নেটমাধ্যমে প্রকাশিত ওই তালিকা তাঁকে দেখানোই হয়নি। যদিও দলীয় বিবাদ তার আগেই শুরু হয়েছিল। ২৮ জানুয়ারি ওই তালিকা সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের দেখানো হলেও, তা হাতে দেওয়া হয়নি। ওই দিন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাংবাদিক সম্মেলন শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ১০৭টি পুরসভার প্রার্থিতালিকা দলের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়।
এর পরেই ঘটে বিভ্রাট। সংবাদমাধ্যমে পার্থ জানিয়ে দেন, দলের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত তালিকা সঠিক নয়। কারণ ওই তালিকায় কোনও স্বাক্ষর নেই। এর পরেই প্রকাশিত হয় স্বাক্ষর-সহ তালিকা। সেই তালিকার প্রতিটি পাতায় দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্বাক্ষর। সঙ্গে দলীয় রাবারস্ট্যাম্প। দ্বিতীয় ওই তালিকা প্রকাশ করা হয় জেলা স্তর থেকে। এরপর প্রথম ও দ্বিতীয় তালিকায় থাকা প্রার্থীদের নাম নিয়ে শুরু হয় বিবাদ। যদিও পরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সুব্রত বক্সীর স্বাক্ষর করা ও দলের সিলমোহর দেওয়ার প্রার্থী তালিকা জেলায় জেলায় পাঠিয়ে বিতর্ক ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু তাতেও ওই প্রথম বিতর্কিত তালিকা নিয়ে গোলমাল কমেনি।
সেই বিবাদে নাম না করে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেন, ফেসবুকের অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর ইঙ্গিত ছিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাকের বিরুদ্ধে। যার জেরে এখন পিকের সংস্থা আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া নিয়েও জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও, কোনওপক্ষই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে এসে কোনও বিবৃতিই দেয়নি। এ বার সেই বিতর্কের সূত্রপাতের অধ্যায়টিকেই মুছে ফেলা হল নেটমাধ্যম থেকে।
শনিবারের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নেটমাধ্যমে নেতাদের মতামত প্রকাশ নিয়েও নিজের অবস্থান জানিয়েছেন। স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নেটমাধ্যমে ইচ্ছে মতো মন্তব্য করে দলকে বিড়ম্বনায় ফেলা যাবে না। নেটমাধ্যমের চেয়ে নেতাদের সংগঠনের কাজে বেশি মনোনিবেশ করতে বলেছেন তিনি। আর তাঁর এমন নির্দেশের পর দিনই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিতর্কিত প্রথম প্রার্থী তালিকাটি সরিয়ে দেওয়া হল। তবে তৃণমূলের একাংশ বলছেন, এত দিন সর্বভারতীয় তৃণমূলের ফেসবুক পেজটির দেখভাল করত আইপ্যাক। সম্প্রতি তাঁদের হাত থেকে সেই দায়িত্ব সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের হাত থেকে নেটমাধ্যমে অ্যকাউন্টগুলি দলের হাতে আসতেই ওই প্রার্থী তালিকাটি মুছে দেওয়া হয়েছে। যদিও, শুক্রবারই আইপ্যাক তাঁদের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডলে দাবি করেছে, সর্বভারতীয় তৃণমূল বা তাঁদের নেতাদের নেটমাধ্যমের কোনও অ্যাকউন্টের দায়িত্বে তাঁরা নেই।