সমীক্ষার মাধ্যমে চটকলের শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করবে শ্রম দফতর। প্রতীকী ছবি
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় আড়াই লক্ষ চটকল শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে এক নতুন পন্থা অবলম্বন করতে চলেছে শ্রম দফতর। এ বার আর বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে কেবল ট্রেড ইউনিয়ন বা মালিকপক্ষের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার বদলে, চটকলের শ্রমিকদের অবস্থা সরজমিনে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে তারা। সেই কারণে এ বিষয়ে একটি সর্বভারতীয় বিশেষজ্ঞ সংস্থার সমীক্ষকদের দিয়ে সমীক্ষা করাতে অগ্রসর হয়েছে দফতর। সমীক্ষা সংস্থার সঙ্গে দফতরের আধিকারিকরাও ময়দানে নেমেছেন বলেই খবর। সম্প্রতি তাঁরা রাজ্যের একাধিক চটকলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সমীক্ষার শুরু করেছেন।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে সমীক্ষকদের সঙ্গে ট্রেড ইউনিয়নের নেতাদেরও রাখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ৩১ মার্চের মধ্যে এই বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত চুক্তি করতে চায় রাজ্য। এর আগে রাজ্যে শিল্পক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিয়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করার জন্য এমন কোনও সমীক্ষা করায়নি রাজ্য সরকারের কোনও দফতর। সূত্রের খবর, সমীক্ষক সংস্থাকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দফতরের অধীনস্থ একটি কমিটি। কমিটিতে বিরোধী শিবিরের পাঁচ এবং শাসকদলের একজন শ্রমিকনেতাকে রাখা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছেন মালিক ও সরকারপক্ষের প্রতিনিধিরা।
মোট ৪০টি প্রশ্নকে সামনে রেখে চালানো হচ্ছে সমীক্ষা। তাতে চটকল শ্রমিকদের কম বেতন সহ বিভিন্ন বঞ্চনার কথা উঠে এসেছে। যা দেখে আধিকারিকরা মনে করছেন, এই শ্রমিকদের আয় অনেকটাই বৃদ্ধি করা দরকার। সমীক্ষকদের কাছে বহু চটকল শ্রমিক তাঁদের ন্যূনতম মজুরি অত্যন্ত কম বলে অভিযোগ করেছেন বলে ইতিমধ্যে জেনেছেন শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না। বছর চারেক আগের চুক্তি অনুযায়ী পাওয়া বেতন দিয়ে সংসার চালানো শ্রমিকদের পক্ষে দুষ্কর হয়ে পড়েছে বলেও ওই সমীক্ষক দলটি জেনেছে বলেই সূত্রের খবর। সেই সঙ্গে বেশ কিছু চটকলে নিয়মিত পিএফ বা অন্যান্য সুবিধা মিলছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ এসেছে যে, গ্র্যাচুইটি বা অন্যান্য অবসরকালীন প্রাপ্য নিয়ে বঞ্চনা করছে মালিকপক্ষ। বহু ক্ষেত্রে কারখানায় উপযুক্ত স্বাস্থ্য ও দুর্ঘটনা মোকাবিলা সংক্রান্ত পরিকাঠামো, মহিলা শ্রমিকদের ন্যায্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়েও একাধিক অভিযোগ পেয়েছে সমীক্ষক সংস্থাটি।