High Court

Calcutta High Court: এজলাসে দাঁড়িয়েই মুচলেকা প্রধান শিক্ষকের, জরিমানা দিলেন ১০ হাজার টাকা

ওই শিক্ষককে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে সুপারিশ করে আদালত। এর পরই আগের অবস্থান পাল্টে নেন প্রধান শিক্ষক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ২২:০৫
Share:

কলকাতা হাই কোর্ট নিজস্ব চিত্র

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের পরও নিজের ক্ষমতার প্রয়োগ করেছিলেন। আর তারই ফল ভুগতে হল প্রধান শিক্ষককে। অবশেষে শুক্রবার নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া আদর্শ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক নিজের ভুল স্বীকার করে মুচলেকা দিলেন আদালতে। জানালেন, মামলার ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১০ হাজার টাকা জরিমানা তিনি মেটাবেন।

Advertisement

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রীতম পালিত পিএইচডি করার জন্য ছাড়পত্র (এনওসি) চেয়েছিলেন স্কুলের কাছে। স্কুল তা দিতে গড়িমসি করে। বিলম্ব হচ্ছে দেখে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রীতম। গত শুক্রবার উচ্চ আদালত তিন দিনের মধ্যে ওই শংসাপত্র ইমেল মারফত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই মতো স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে শংসাপত্র দেন। কিন্তু তাতে চারটি শর্তও বেঁধে দেন। যা মেনে নেওয়া ওই শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব ছিল না। বিচারপতিও ওই শর্তগুলো শুনে অবাক হয়ে যান।

শর্তে বলা হয় এক, পিএইচডি ডিগ্রি করার পর তিনি কোনও আর্থিক সুবিধা নিতে পারবেন না। দুই, ডিগ্রির পঠনপাঠন চলাকালীন কোনও ছুটি নিতে পারবেন না। তিন, ওই ডিগ্রি অন্য কোনও চাকরি বা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করলে বয়সকালীন ভাতার দাবি করতে পারবেন না। চার, স্কুলের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত করা যাবে না। স্কুলের শর্তগুলির পরই চার দিনের মধ্যে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং প্রশাসককে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্য, নির্দেশের পরও আদালতের সঙ্গে চালাকি করছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। যে শর্তগুলো চাপানো হয়েছে তা আদলতের কাছে বোধগম্য নয়। একই সঙ্গে আদালতের মন্তব্য, প্রধান শিক্ষককের এত ক্ষমতা নেই যে তিনি রাজ্য সরকার এবং শিক্ষা দফতরের থেকেও কড়া নির্দেশ দিতে পারেন। ওই শর্তগুলো তাঁর এক্তিয়ারের বাইরে।

Advertisement

আদালতের নির্দেশ মতো শুক্রবার আদালতে হাজির হন প্রধান শিক্ষক। তাঁর যুক্তি শুনে উষ্মা প্রকাশ করেন বিচারপতি। ওই শিক্ষককে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রাজ্যের কাছে সুপারিশ করে আদালত। এর পরই আগের অবস্থান পাল্টে নেন প্রধান শিক্ষক। নিজের ভুল স্বীকার করেন তিনি। তাঁকে যাতে পদ থেকে সরানো না হয় বিচারপতির কাছে বার বার অনুরোধ করেন। আদালতের কাছে মুচলেকা দিতেও প্রস্তুত হন প্রধান শিক্ষক। বিচারপতির অনুমতি নিয়ে এজলাসে দাঁড়িয়েই ক্ষমা প্রার্থনা করে মুচলেকা দেন প্রধান শিক্ষক। তিনি জানান, পরিস্থিতি বুঝতে তাঁর ভুল হয়েছে। সেই হেতু তিনি এই মামলার ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ হাজার টাকা জরিমানা দেবেন। শেষ পর্যন্ত আদালত তাঁকে মুচলেকার শর্তেই এ যাত্রায় ক্ষমা করে।

অন্য দিকে, আদালতই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ওই মামলাকারী শিক্ষক প্রীতমকে শংসাপত্র দেন। এ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী সুদীপ ঘোষ চৌধুরী বলেন, "বেআইনি ভাবে শর্ত চাপিয়েছিল স্কুল। এখন তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করেছে। আর আদালতই আমার মক্কেলকে শংসাপত্র দেওয়ার কথা জানায়।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement