Jadav Payeng

Jadav Payeng: স্কুলবেলাতেই বৃক্ষরোপণের পাঠ চাইছেন ‘অরণ্যমানব’

যাদবের জন্ম অসমের মিসিং জনজাতির এক পরিবারে। বাবা ছিলেন গোপালক। যাদবও গোপালক। জানালেন, এখন তাঁর গোসম্পদ বলতে রয়েছে ৫০টি গরু আর ৫০টি মোষ। স্ত্রী বিনীতা আর তিন সন্তান— মুমুনি, সঞ্জয়, সঞ্জীবকে নিয়ে যাদব থাকেন মোলাই কাঠনিবাড়িতেই। আর নিজেকে নিরন্তর ব্যস্ত রাখেন গাছের পর গাছ লাগানোয়। ছড়িয়ে দিতে থাকেন সভ্যতা রক্ষায় বৃক্ষবার্তা।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২২ ০৭:১১
Share:

বক্তৃতার ফাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখছেন যাদব পায়েং। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

একেবারে শৈশব থেকে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি না-হলে সভ্যতা টিকে থাকবে না বলে সতর্ক করে দিলেন ‘দ্য ফরেস্টম্যান অব ইন্ডিয়া’, ভারতের অরণ্যমানব। কলকাতায় এসে জানিয়ে গেলেন, স্কুল স্তর থেকেই বৃক্ষরোপণ নিয়ে সচেতনার পাঠ দেওয়া খুব জরুরি। সর্বত্র দরকার বনায়ন। তাঁর মতে, সীমান্ত জুড়ে গাছ লাগিয়ে দেওয়া যায়। তাতে সীমারেখাও স্পষ্ট থাকে। জানালেন, বাংলাদেশে গিয়েও এমন পরামর্শ দিয়ে এসেছেন তিনি।

Advertisement

বিশেষ ভাবে পশ্চিমবঙ্গের পরিবেশ রক্ষায় সুন্দরবনকে বাঁচিয়ে রাখা খুব প্রয়োজন বলে মনে করেন অরণ্যমানব। তাঁর উপলব্ধি, নির্বিচার বৃক্ষনিধন আটকাতে না-পারলে পরিবেশের ভারসাম্য বিপন্ন হবে। বিপদে পড়বে মানবসভ্যতা।

প্রকৃত নাম যাদব পায়েং, যাদব মোলাই নামেও পরিচিত। ৬৩ বছর বয়সি যাদব ৩০ বছর ধরে অসমে ব্রহ্মপুত্র নদের বালুচরে তৈরি করেছেন ১৩৬০ একরের বনাঞ্চল। অসমের জোরহাট জেলার কোকিলামুখের কাছে ব্রহ্মপুত্রের সেই বনকে বলা হয় ‘মোলাই কাঠনিবাড়ি’। বনসৃজনের সেই কর্মকাণ্ড তাঁকে এনে দিয়েছে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মান। তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন তথ্যচিত্র। দক্ষিণ ভারতে তৈরি হয়েছে পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবিও। প্র্যাক্সিস বিজনেস স্কুলের আমন্ত্রণে কলকাতায় এসে যাদব জানালেন, শুধু অসমে নয়, তাঁর কর্মকাণ্ড প্রসারিত হয়েছে বহির্বিশ্বেও। এখন মেক্সিকোয়, দুবাইয়ে বনাঞ্চল গড়ার কাজে ব্যস্ত তিনি। শান্ত, নিচু স্বরে কথা বলেন যাদব। জানালেন, ইতিমধ্যে মেক্সিকো ও দুবাই ঘুরে সব দেখে এসেছেন। আবার যেতে হবে। জানালেন, পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান উষ্ণায়ন রুখতে বৃক্ষরোপণের বিষয়ে সচেতনতা এখন অত্যন্ত জরুরি।

Advertisement

যাদব বনভূমি তৈরির কাজে হাত দিয়েছিলেন ৪২ বছর আগে। মোলাই কাঠনিবাড়িতে বিভিন্ন ধরনের গাছের সঙ্গে রয়েছে গন্ডার-সহ নানান বন্যপ্রাণী। বন্যা হলে সেই বনে আশ্রয় নেয় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, হাতিও। যাদব বললেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই গাছ, পাখি, জীবজন্তু খুব ভাল লাগত। ধীরে ধীরে বুঝেছিলাম, গাছ কাটলে শুধু গাছের ক্ষতি হয় না। আকাশের পাখি, বন্যপ্রাণীরাও বিপদে পড়ে।’’

যাদবের জন্ম অসমের মিসিং জনজাতির এক পরিবারে। বাবা ছিলেন গোপালক। যাদবও গোপালক। জানালেন, এখন তাঁর গোসম্পদ বলতে রয়েছে ৫০টি গরু আর ৫০টি মোষ। স্ত্রী বিনীতা আর তিন সন্তান— মুমুনি, সঞ্জয়, সঞ্জীবকে নিয়ে যাদব থাকেন মোলাই কাঠনিবাড়িতেই। আর নিজেকে নিরন্তর ব্যস্ত রাখেন গাছের পর গাছ লাগানোয়। ছড়িয়ে দিতে থাকেন সভ্যতা রক্ষায় বৃক্ষবার্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement