সরকারের উদ্দেশ্য, ছোট ও মাঝারি সব কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা। ছবি: সংগৃহীত।
কৃষকদের ধান বিক্রির সুবিধা করে দিতে নতুন পরিষেবা চালু করতে চলেছে খাদ্য দফতর। প্রত্যন্ত ও প্রান্তিক এলাকাগুলির কথা মাথায় রেখেই নতুন এই পরিষেবা শুরু হয়েছে। নতুন এই পরিষেবায় ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র শুরু করা হবে। এই বিষয়ে জেলায় জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। আগামী তিন মাস চলবে এই পরিষেবা। সরকারের উদ্দেশ্য, ছোট ও মাঝারি সব কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা। তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকরা এই ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রে ধান বিক্রি করলে কুইন্টাল পিছু ২০ টাকা করে ভাতাও দেওয়া হবে।
খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রান্তিক এলাকার বহু ছোট ছোট কৃষক এই নতুন পরিষেবার ফলে উপকৃত হবেন। সুন্দরবন-সহ রাজ্যে বহু এমন গ্রাম রয়েছে যেখানে রাস্তাঘাট এখনও দুর্গম। এমনকি বহু প্রত্যন্ত অঞ্চল রয়েছে যেখান থেকে নদী পেরিয়ে ধান বিক্রি করতে আসতে হয়। তাই ভ্রাম্যমাণ ধান বিক্রয়কেন্দ্র চালু হলে প্রত্যন্ত এলাকার কৃষকরা সহজেই ধান বিক্রি করতে পারবেন।’’ তাঁর আরও যুক্তি, ‘‘এই পদ্ধতিতে কৃষকরা ফসলের সঠিক দাম যেমন পাবেন, তেমনই রাজ্যের ধান কেনার পরিমাণও এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যাবে।’’
ভ্রাম্যমান ধান বিক্রয় কেন্দ্র চালু করার কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের অভিযোগ জমা পড়ছিল খাদ্য দফতরে। যে অভিযোগে বলা হচ্ছিল, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের অনেক কৃষকই সরকারের কাছে ধান বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছেন না। কারণ তাঁদের গ্রাম থেকে ধান বিক্রয়কেন্দ্র অনেকটাই দূরে। তাই সেই সব এলাকার কৃষকরা ক্রমেই চাষের কাজের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন। এমন অভিযোগ আসার পরেই খাদ্য দফতরে পর্যালোচনা শুরু হয়েছিল। এতদিনে সেই পর্যালোচনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে।
এই প্রকল্পে খাদ্য দফতরের একটি গাড়ি প্রত্যন্ত জায়গায় ঘুরে ঘুরে ধান কিনবে। মূলত যেসব ব্লকে প্রচুর ধান উৎপাদন হয়, সেই এলাকার প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে এই ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি দফতরের এক আধিকারিক। এমন ব্লকগুলিতে অন্তত ৭০টি করে ‘মোবাইল সেন্ট্রালাইজড প্রকিওরমেন্ট সেন্টার’ (এমএসপিএস) চালু করা হবে। সপ্তাহে পাঁচদিন একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এই গাড়িটি রাখা হবে। একটি জায়গায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মাসে পাঁচবার করে সেই গাড়ি আসবে। যাতে সর্বস্তরের কৃষকরা নিজেদের ধান সঠিক সময় বিক্রি করতে পারেন, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।