—প্রতীকী ছবি।
বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের ফাইল আটকে রয়েছে দফতরে দফতরে। কোথাও আবার ফাইল উপযুক্ত জায়গায় জমা পড়লেও, তাতে প্রয়োজনীয় নথি এবং তথ্য থাকছে না। গত কয়েক মাস ধরে এমনই অভিযোগ পাচ্ছিল অর্থ দফতর। তাই এ বার রাজ্যের সমস্ত দফতরকে সজাগ হতে কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে নবান্ন থেকে সেই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। যেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে দফতরগুলিকে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, শুধু ফাইল আটকে থাকাই নয়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ফাইল ছাড়া হলেও, তাতে প্রয়োজনীয় অনুমোদন বা নথি কিছুই নেই। তাই এই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট কয়েকটি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে দফতরগুলিকে। যেখানে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও প্রকল্পের ফাইল ছাড়তে গেলে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে। সেখানে কোন কোন প্রয়োজনীয় তথ্য এবং নথি দিতে হবে।
নবান্ন সূত্রে খবর, অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে অর্থ দফতরের অধীনে ‘প্রজেক্ট ক্লিয়ারেন্স কমিটি’ (পিসিসি) গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। প্রতিটি দফতরের প্রকল্প যাচাইয়ের পর ছাড়পত্র দেয় এই কমিটি। পিসিসি গত কয়েক মাস ধরে পর্যবেক্ষণ করছিল যে, দফতরগুলির উদাসীনতার কারণেই প্রকল্প সংক্রান্ত সমস্ত নথি জমা পড়ছে না। ফলস্বরূপ প্রকল্পের ছাড়পত্র দিতে সমস্যা হচ্ছিল। এমন ঘটনার জেরে দেরি হচ্ছে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে। এই পর্যবেক্ষণের ফলে ক্ষোভ জমছিল নবান্নের একাংশ আধিকারিকদের মধ্যে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল সরকারি প্রকল্পের কাজ কোনও লাল ফিতের ফাঁসে যেন আটকে না থাকে। তাই বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা বৃদ্ধি করে অর্থ দফতর। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্দেশিকা জারি করে দফতরগুলিকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে কী ভাবে দ্রুত সরকারি কাজ করতে হবে।
নবান্নের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “দেখা যাচ্ছে পিসিসি’র কাছে জমা পড়া কাগজের মধ্যে প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ নথিই নেই। এই অবস্থায় কমিটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে ফের সেই নথি চেয়ে পাঠায়। ফলে অকারণে সময় নষ্ট হয়। দেরি হয় ছাড়পত্র দিতে।” তিনি আরও বলেন, “এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি দফতরের আধিকারিকদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকার কোনও রকম গাফিলতি বরদাস্ত করবে না। দীর্ঘ পর্যবেক্ষণের পরেই অর্থ দফতরের তরফে এমন কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞপ্তি দিয়েই যে অর্থ দফতরের দায়িত্ব শেষ হয়নি, প্রয়োজনে তা আবারও বুঝিয়ে দেওয়া হতে পারে।”
কোন প্রকল্পের ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) থেকে শুরু করে টেন্ডার প্রক্রিয়া কী ভাবে সম্পন্ন করতে হবে তা-ও অর্থ দফতরের প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।