Rally on Howrah Bridge Today

টোটোচালকদের মিছিলে স্তব্ধ হাওড়া ব্রিজ থেকে মধ্য কলকাতা! দিনের ব্যস্ত সময়ে ভোগান্তিতে জনতা

মঙ্গলবার সকাল ১১টার কিছু পর থেকে হঠাৎই থমকে যায় হাওড়া ব্রিজ থেকে মধ্য কলকাতার বিস্তৃত এলাকা। হাজার হাজার টোটোচালকের দীর্ঘ মিছিলে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ব্রাবোর্ন রোড।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১১:৫৯
Share:

এক পাশে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে কলকাতামুখী গাড়ি। অন্য দিক ধূ ধূ ফাঁকা। কারণ হাওড়ামুখী গাড়ি আগেই আটকে গিয়েছে বড় বাজার এলাকায়। — নিজস্ব চিত্র।

দিনের ব্যস্ত সময়ে হঠাৎই থমকে গেল হাওড়া ব্রিজ থেকে মধ্য কলকাতার বিস্তৃত এলাকা। মঙ্গলবার সকাল ১১টার কিছু পর থেকেই হাজার হাজার টোটোচালক এবং মোটর ভ্যান চালকের মিছিলে বন্ধ হয়ে যায় ব্রাবোর্ন রোড। ফলে বন্ধ হয়ে যায় কলকাতায় প্রবেশের অধিকাংশ রাস্তা। শহরতলি থেকে কলকাতার ঢোকার মূল প্রবেশপথ এই হাওড়া ব্রিজ। তার পরেই বড়বাজার এবং ব্রাবোর্ন রোড। টোটোচালকদের মিছিল সেই হাওড়া ব্রিজ হয়েই ব্রাবোর্ন রোড ফ্লাই ওভার ধরে এগোতে শুরু করে। যার ফলে হাওড়ায় আসার গাড়ি আটকে যায় ব্রাবোর্ন রোডে। হাওড়া ব্রিজেও সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে বাস, ট্যাক্সি, অন্যান্য গাড়ি। একে পুজোর বাজার করার ভিড়, তার উপর অনেকে কর্মস্থলেও যান এই সময়ে। মিছিলের জন্য হওয়া তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন নিত্যযাত্রীরা।

Advertisement

হাওড়া ব্রিজ ধরে চলা ওই টোটোচালকদের মিছিলে রয়েছেন কম করে ১৫-১৬ হাজার মানুষ। প্রত্যেকেই হয় টোটো চালক নয়তো মোটর ভ্যান চালক। সরকারি লাইসেন্স এবং জাতীয় সড়কে গাড়ি চালানোর অনুমতি— মূলত এই দুই দাবি নিয়েই মঙ্গলবার পথে নেমেছে তারা। গন্তব্য পরিবহণ ভবন। মিছিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘পরিবহণ ভবন চলো’ অভিযান।

হুগলির চাপা ডাঙা থেকে এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন মোস্তাফা মোল্লা। তাঁর দাবি, ‘‘বাংলার ২০ লক্ষ টোটো আছে। মোটর ভ্যানের সংখ্যা প্রায় ১৫ লক্ষ। এঁরা প্রত্যেকেই প্রতি দিন আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশের জুলুমবাজির জন্য। ওরা যখন তখন ‘কেস’ দিচ্ছে। এক একদিন যা রোজগার করছি, তার থেকে বেশি টাকা পুলিশকেই দিতে চলে যাচ্ছে। আজ তাই তার প্রতিবাদেই পথে নেমেছি।’’

Advertisement

তখন ব্রাবোর্ন রোডের ফ্লাইওভার ধরে এগোচ্ছে মিছিল। — নিজস্ব চিত্র।

হাওড়ার আন্দুল থেকে এসেছেন বিনয় রুইদাস। তিনি মোটর ভ্যানচালক। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই না, পেট চালাতে গিয়ে রোজ রোজ এই হয়রানির মুখে পড়তে হোক। সরকার আমাদের বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করে দিলে আমরা সেই কাজই করব।’’

সম্প্রতিই রাজ্য পরিবহণ দফতর টোটোচালকদের উপর একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, টোটোচালকেরা জাতীয় সড়কে বা মূল রাস্তায় টোটো চালাতে পারবে না। মূলত সেই নির্দেশের প্রতিবাদেই পরিবহণ দফতরে যাওয়ার এই অভিযানের ডাক দেন টোটোচালকেরা। তাঁদের সঙ্গে মঙ্গলবার সকালের ওই মিছিলে যোগ দেন মোটর ভ্যান চালকেরাও।

উল্লেখ্য, রাজ্য সরকারের পরিবহণ দফতরের কার্যালয় ধর্মতলায়। হাওড়া ব্রিজ থেকে সেই পরিবহণ দফতরের উদ্দেশেই ওই দীর্ঘ মিছিল এগিয়ে চলায় সকাল ১১টার কিছু পর থেকে থমকে যায় হাওড়া থেকে ধর্মতলাগামী রাস্তাগুলি। অনেক নিত্যযাত্রীকেই দেখা যায় বাস, ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়ে হাঁটতে শুরু করেছেন হাওড়া ব্রিজ, বড় বাজার বা স্ট্র্যান্ড রোড ধরে।

তবে দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ হাওড়া থেকে ধর্মতলামুখী ব্রাবোর্ন রোডের একটি লেন খুলে দেওয়া হয়। তার পরে খুব ধীরে হলেও যান চলাচল শুরু হয়। কিন্তু ট্রাফিক কনস্টেবলরা জানান, স্ট্র্যান্ড রোড থেকে হাওড়ামুখী যান চলাচল চালু করতে আরও কিছু ক্ষণ সময় লাগবে। ফলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতেও সময় লাগবে আরও কিছু ক্ষণ। পরে দুপুর বাড়লে আরও কিছুটা স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement