নতুন ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের বছরে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা আয় হবে বলেই দাবি পরিবহণ কর্তাদের। — ফাইল চিত্র।
আগামী এপ্রিল থেকেই নতুন রূপে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (আরসি) পাবেন গাড়ির মালিক ও চালকরা। কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের গাইডলাইন মেনেই তৈরি হচ্ছে এই দুই ধরনের গাড়ি চালানোর লাইসেন্স ও আরসি। নতুন এই কার্ডে আবেদনকারীর নাম ও ফোন নম্বর-সহ যাবতীয় বিবরণ ছাপা হবে। কিউআর কোড ও চিপযুক্ত এই কার্ডটি পরিবহণ দফতরের অনলাইন ব্যবস্থায় যাচাই করার পরেই তা সক্রিয় করা হবে বলে জানানো হয়েছে। টেন্ডার ডেকে একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই কাজের জন্য বাছাই করা হয়েছে। শীঘ্রই এই সংক্রান্ত বিষয়ে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করবে সংস্থাটি। কার্ডটি তৈরির দায়িত্ব ওই এজেন্সির হাতে থাকলেও সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ থাকবে পরিবহণ দফতরের হাতেই। নতুন লাইসেন্স ও সিআরটি দেখতে হবে অনেকটা এটিএম কার্ডের মতো।
প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি লাইসেন্স এবং আরসি ছাড়া হয় পরিবহণ দফতর থেকে। এতদিন এই কার্ডে বিশেষ প্রযুক্তি না-থাকায় তা নানা ভাবে অসাধু কাজে তার ব্যবহার করা হত। বহুক্ষেত্রে অপরাধীরা লাইসেন্সকে পরিচয়পত্র হিসেবে ব্যবহার করে অসামাজিক কাজ করেন। কিন্তু এই কার্ডটি চালু হয়ে গেলে তেমনই ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না বলেই মনে করছেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা। তা ছাড়া রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচল নিয়ে কাগজের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও সিআরের বৈধতা নিয়ে পুলিশ ও গাড়ি চালকদের মধ্যে বাদানুবাদ লেগেই থাকে। এ বার রাজ্য জুড়েই লক্ষ লক্ষ গ্রাহকের এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
লাইসেন্স ও আরসির খরচও গ্রাহকের থেকেই নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবেদনের সময়ই ২০০ টাকা বাড়তি চার্জ কেটে নেওয়া হবে। নতুন ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের বছরে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা আয় হবে বলেই দাবি পরিবহণ কর্তাদের। এই কার্ড তৈরি থেকে গ্রাহকের হাতে পৌঁছনোর দায়িত্ব একক ভাবে পরিবহণ দফতর পালন করবে।
নতুন এই পরিষেবা শুরু করার জন্য কলকাতার বেলতলা মোটর ভেহিক্যালস অফিসে একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে। লাইসেন্স বা আরসি তথ্য অনলাইনে কেন্দ্রীয় অফিসে চলে আসবে। সেখানেই থেকেই এই পুরো প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। স্পিড পোস্টের মাধ্যমে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও আরসি আবেদনকারীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। পরিবহণ আধিকারিকের কথায়, ডিএল কিংবা আরসি মঞ্জুর হলে মাত্র সাতদিনের মধ্যে লাইসেন্স ও আরসি কার্ডটি গ্রাহক হাতে পেয়ে যাবেন।