কলকাতা হাইকোর্ট।
নারদ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নয়, কলকাতা হাইকোর্টেই লড়াই করতে চায় রাজ্য সরকার। সোমবার দিনভর টানাপড়েনের পর ৪ নেতার জামিন স্থগিত রেখে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই নিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করা যায় কি না সেই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। গভীর রাত পর্যন্ত সরকার ও দলীয় স্তরে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আপাতত হাইকোর্টের লড়াইয়ের দিকেই মনোনিবেশ করা হবে। কারণ, দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা জেলবন্দি। আপাতত হাইকোর্টে আইনি লড়াই করে তাদের সিবিআইয়ের হেফাজত থেকে মুক্ত করে আনাই লক্ষ্য রাজ্য সরকারের।
তৃণমূল নেতৃত্ব চাইছে, যে চারজন নেতা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁদের সুস্থ রাখার বন্দোবস্ত করতে। কারণ,পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সত্তরোর্ধ্ব। মদন মিত্র ফিরহাদ হাকিম ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বয়সও ষাটের বেশি। করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে তাঁদের সুস্থ রেখে, কলকাতাতেই চলুক সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই। মদন ও শোভনকে ইতিমধ্যে ভর্তি করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। সকালে সুব্রতকেও ভর্তি করানো হয় এসএসকেএম-এ। রাজনীতির কারবারিদের মতে, নারদ মামলায় দলের শীর্ষ নেতাদের জড়িয়ে পড়ার ঘটনা জাতীয় রাজনীতিতে এমনিতেই চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের হাত পেতে টাকা নেওয়ার ভিডিয়ো দেখেছে গোটা দেশ। তাই বিষয়টিকে সুপ্রিমকোর্টে নিয়ে গিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে আর আলোচনা চাইছে না বাংলার শাসক দল। বরং কলকাতা হাইকোর্টে আইনি লড়াই করে নেতাদের ছাড়িয়ে আনতে পারলে তা অনেক বেশি কার্যকরী হবে। তৃণমূলের আশা, এই কৌশলে একদিকে যেমন দলের কর্মীদের উদ্দেশে লড়াইয়ের বার্তা পৌঁছে দেওয়া যাবে, তেমনই জাতীয় রাজনীতিতে রাজ্যের দুই মন্ত্রীর সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার ঘটনাকেও জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা থেকেও অনেকটাই দূরে রাখা যাবে।
তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তৃণমূলের কোনও নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী। কারণ, সোমবার আদালতের বাইরে দাঁড়িয়ে তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রীর কড়া বিবৃতির সমালোচনা করে রাতে হাইকোর্ট গ্রেফতার হওয়া নেতাদের জামিন স্থগিত রেখে দেয়। সে কথা মাথায় রেখেই আপাতত মুখে কুলুপ তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের। তবে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়টি আপাতত স্থগিত রাখার বিষয়ে সোমবার রাতেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, আপাতত সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ভাবনা তাদের নেই।