Dakshineswar Temple

সুরক্ষা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে খুলছে দক্ষিণেশ্বর মন্দির, বদল বহু নিয়মে

মন্দির খোলা-বন্ধের আগে ও পরে ২০ মিনিটের মধ্যে মন্দিরের সিংহদুয়ারও খোলা এবং বন্ধ করা হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২০ ০৩:০৯
Share:

সতর্কতা: দূরত্ব-বিধি মেনে এবং স্যানিটাইজ়েশন টানেলের (নীচে) মধ্যে দিয়ে কী ভাবে যেতে হবে মন্দিরে, বুধবার দক্ষিণেশ্বরে চলছে তারই মহড়া। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

লকডাউনের কারণে গত ২১ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল দক্ষিণেশ্বর মন্দির। তার প্রায় তিন মাস পরে, আগামী ১৩ জুন, শনিবার থেকে দর্শনার্থীদের জন্য

Advertisement

ফের খুলে যাচ্ছে ওই মন্দিরের দরজা। তবে কালীঘাট মন্দির কবে খুলবে, তা নিয়ে কয়েক বার বৈঠক হলেও দিন চূড়ান্ত হয়নি।

দর্শনার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তৈরি নতুন পরিকাঠামো কী ভাবে কাজ করবে, তা বুধবার পরীক্ষামূলক ভাবে খতিয়ে দেখেন দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা, কামারহাটির পুর প্রশাসক গোপাল সাহা এবং কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তথা মন্দিরের চেয়ারম্যান (নির্বাচন) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রতিনিধিদলও এ দিন দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ওই সুরক্ষা পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে।

Advertisement

গত ১৬৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম টানা এত দিন বন্ধ ছিল ভবতারিণী মন্দির। ফের খোলার আগে সংক্রমণ রুখতে স্কাইওয়াক থেকে শুরু করে মন্দির চত্বর পর্যন্ত একগুচ্ছ সুরক্ষা বলয় তৈরি করা হয়েছে বলে মন্দির সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় সরকার গত সোমবার থেকে সব ধর্মীয় স্থান খুলে দেওয়ার কথা বললেও এই নতুন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখার জন্যই কয়েক দিন পরে দক্ষিণেশ্বর মন্দির খোলা হবে বলে জানিয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, এ বার থেকে মন্দির খোলা ও বন্ধের সময় পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মন্দির খোলা থাকবে। মন্দির খোলা-বন্ধের আগে ও পরে ২০ মিনিটের মধ্যে মন্দিরের সিংহদুয়ারও খোলা এবং বন্ধ করা হবে।

আরও পড়ুন: যান-দুর্ভোগ কমাতে সরকারি কর্মীদের দু’ভাগে কাজের সময় বাঁধলেন মুখ্যমন্ত্রী

দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী জানাচ্ছেন, সংক্রমণ রুখতে স্কাইওয়াকে ওঠার সময়েই দর্শনার্থীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। পার্কিং লটের সামনে আরও এক বার ওই পরীক্ষা হবে। কোনও দর্শনার্থীর শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে তাঁকে সেখান থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এর পরে জীবাণুমুক্ত সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গিয়ে তবেই মন্দির চত্বরে পৌঁছবেন দর্শনার্থীরা। সেখানে মেঝেতে ছ’ফুট দূরে দূরে আঁকা পায়ের ছবির উপরে দাঁড়িয়ে লাইন দিতে হবে দর্শনার্থীদের।

একসঙ্গে ৪০০ জন দর্শনার্থী মন্দির চত্বরে ঢুকতে পারলেও পুজোর জন্য মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন ১০ জন করে। তবে প্রসাদ ছাড়া আর কোনও কিছুই (ফুল, সিঁদুর) পুজোর ডালায় দেওয়া যাবে না। মন্দিরের ভিতরে প্রায় ৬-৮ ফুট দূরত্বে নির্দিষ্ট জায়গায় ডালা রেখে দিতে হবে। সেখান থেকে ডালা তুলে নিয়ে পুজো করে ফের সেখানেই রেখে দেবেন পিপিই পরা পুরোহিতেরা।

ভবতারিণী মন্দির ছাড়া শিবমন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির, শ্রীরামকৃষ্ণের শয়নকক্ষ-সহ অন্য মন্দিরে আপাতত প্রবেশ করতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। পঞ্চবটী-সহ অন্যত্র বসতেও পারবেন না তাঁরা। হকারদেরও সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে দিয়ে হেঁটেই মন্দির চত্বরে পৌঁছতে হবে।

এর পাশাপাশি, ডালা আর্কেড এবং স্কাইওয়াকের দোকানগুলি জোড় ও বিজোড় সংখ্যা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে খোলা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন্ধ রাখা হচ্ছে ভিআইপি দর্শন ব্যবস্থাও। মন্দির চত্বরে কচুরি-ডালের দোকান খোলা হলেও সেখানে বসে খাওয়া যাবে না। কুশল বলেন, ‘‘ঝুঁকি নিয়েই পুজো নেওয়া শুরু করছি। করোনা সংক্রমণ হ্রাস পেলে বর্তমান সিদ্ধান্ত প্রয়োজনে পুনর্বিবেচনা করা হবে।’’

আরও পড়ুন: করোনায় গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু ১৭ জনের, আক্রান্ত ৩৪৩ জন

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement