ফাইল ছবি
দলবিরোধী কাজ করেও অনিল-কন্যা বলে ছাড় পেয়ে যাবেন অজন্তা বিশ্বাস, এমনটা হতে দিতে নারাজ রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব। ২৮-৩১ জুলাই তৃণমূলের মুখপত্রে চার কিস্তিতে ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক উত্তর সম্পাদকীয় লেখেন অধ্যাপক অজন্তা। বিষয়টি নজরে আসে আলিমুদ্দিনের। এই ঘটনা রাজ্য সিপিএম নেতৃত্বের কাছে অপ্রত্যাশিতই ছিল। প্রয়াত পলিটব্যুরো সদস্য তথা রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের মেয়ের এমন কাজ মেনে নিতে পারেননি সিপিএমের শীর্ষ নেতারা। প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছিলেন, ‘‘অত্যন্ত খারাপ কাজ হয়েছে।’’ অজন্তা যে হেতু দলের সদস্য এবং দলের অধ্যাপকদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত, তাই কলকাতা জেলা কমিটি সংশ্লিষ্ট এরিয়া কমিটিকে অজন্তার সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেয়। এরিয়া কমিটি কথা বলার পাশাপাশি শো-কজও করে তাঁকে।
অজন্তা জবাবও দেন সেই শো-কজের। কিন্তু তাতে দল সন্তুষ্ট হয়নি বলেই জানা গিয়েছিল। এরিয়া কমিটির পক্ষে অজন্তাকে ছয় মাসের জন্য সাসপেন্ড করার সুপারিশ করা হয় জেলা কমিটির কাছে। শনিবার জেলা কমিটির বৈঠকে বিষয়টি আলোচনার সময় কয়েক জন সদস্য তাঁর শাস্তি কমানোর পক্ষে মত দেন। সে ক্ষেত্রে ছ’মাসের শাস্তি তিন মাসে কমিয়ে আনতে বলা হয়। কিন্তু, কমিটির বেশির ভাগ সদস্য যুক্তি দিয়ে বলেন, শুধুমাত্র অনিল বিশ্বাসের মেয়ে বলে দল বিরোধী কাজ করে পার পেয়ে যাবে এমনটা হতে পারে না। কারণ তৃণমূলের মুখপত্রে এক জন পার্টি সদস্য হয়ে লেখা গুরুতর অপরাধ। তাই সেই অপরাধের শাস্তি পর্যন্ত তাঁকে দেওয়া হোক। এ ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দলের সব মহলকে বার্তা দেওয়া যাবে।
দলের রাজ্য কমিটির এক সদস্য ওই বৈঠকে জানিয়েছেন, তৃণমূলের মুখপত্রে লেখার পর থেকে সিপিএম নেতারা অজন্তার সমালোচনা করেছিলেন। পাল্টা তৃণমূল নেতারা দলীয় মুখপত্রে নানা ভাবে সিপিএম নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছে। অথচ সে সব দেখেও নীরব ছিলেন অজন্তা। তাই অজন্তার শাস্তি পাওয়া উচিত। তবে অজন্তা ও সিপিএম-কে ঘিরে যে সমস্ত খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তা নিয়েও কলকাতা জেলা কমিটির নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, বহু সিদ্ধান্তের কথা পার্টি থেকে জানার আগেই সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে হয়েছে। এমন ঘটনা দল ও দলীয় কর্মীদের কাছে ভুল বার্তা দিতে পারে।