রাজ্যের বিভিন্ন থানায় লক্ষাধিক সিভিক পুলিশকর্মী নিয়োগ করাটা কেন জরুরি হয়ে পড়েছিল, সেই প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আর সিভিক পুলিশ নিয়োগের পরীক্ষা-পদ্ধতি কী হবে, তা ঠিক করার জন্য কমিটি গড়ার এক্তিয়ার আদালতের আদৌ আছে কি না, সেই প্রশ্ন তোলা হল কিছু সিভিক পুলিশকর্মীর তরফেই। তাঁদের আইনজীবী, তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার হাইকোর্টে জানান, এই ধরনের কমিটি গড়ার এক্তিয়ারই নেই আদালতের।
হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় গত মে মাসে নির্দেশ দেন, সিভিক পুলিশ নিয়োগের পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সেই জন্য ইতিমধ্যে নিয়োগপত্র পাওয়া সিভিক পুলিশকর্মীদের কাজের মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বরের পরে আর বাড়ানো যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। নিয়োগ-পরীক্ষার পদ্ধতি কী হবে, তা ঠিক করার জন্য সেই সময় তিন সদস্যের একটি কমিটিও গড়ে দেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করেছে রাজ্য। এ দিন তার শুনানিতেই এই মন্তব্য করেন আইনজীবী কল্যাণবাবু। বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ও বারিকুল থানায় কাজ হারানো সিভিক পুলিশকর্মীদের হয়ে মামলা লড়ছেন তিনি।
কল্যাণবাবু আদালতে অভিযোগ করেন, বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মক্কেলদের বক্তব্য না-শুনে একতরফা নির্দেশ দিয়েছেন। তা ছাড়া নিয়োগে স্বচ্ছতার অভাবের অভিযোগ তুলে যাঁরা মামলা করেছিলেন, তাঁদের গত মে মাসেই বরখাস্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ রাজ্যের অন্য সব থানার সিভিক পুলিশকর্মীদের ক্ষেত্রে কাজের মেয়াদ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কল্যাণবাবুর দাবি, আদালতের ওই নির্দেশের জেরে তাঁর মক্কেলরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সংবিধান কর্মপ্রার্থীদের যে-মৌলিক অধিকার দিয়েছে, এই বৈষম্য তার পরিপন্থী।