‘অপারেশন ভারতী ঘোষ’ নিয়ে রাজ্য যখন তোলপাড়, তখন শনিবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে সিআইডি দাবি করল, প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ বা তাঁর স্বামীর বা়ড়িতে কোনও তল্লাশি হয়নি।
তা হলে নাকতলার যে বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি চলল সেটি কার? সেই প্রশ্নের জবাব দেননি ডিআইজি (সিআইডি) নিশাত পারভেজ। আর সিআইডি-র দাবি ‘পুরোপুরি মিথ্যা’ বলে অভিযোগ করে ভারতীর আইনজীবী পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওই বাড়ি থেকে যে সব দলিল ও চাকরির কাগজপত্র সিআইডি বাজেয়াপ্ত করেছে তাতে ভারতী ও তাঁর স্বামীর নাম রয়েছে।’’
সিআইডি-র বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন ভারতীও। শনিবার তাঁর অভিযোগ, কোনও রকম কাগজপত্র ছাড়াই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তদন্তকারীরা তাঁর বাড়ির ঠাকুরের গলার হার ছিঁড়ে নিয়েছেন। এ দিনও নাকতলার একটি বহুতল-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ভারতী ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয় বলে সিআইডি সূত্রের খবর।
পুলিশের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, শুক্রবার ভারতী আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার হুমকি দেওয়ার পরেই ঘাবড়ে গিয়েছে সিআইডি। কারণ, যে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই খানাতল্লাশি, তাতে ভারতীর নাম নেই। চন্দন মাজি নামে দাসপুরের ওই ব্যবসায়ী ২০১৬-র নভেম্বরে সোনা বিনিয়োগ করে প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ এত দিনে কেন আদালতে জানালেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
নিশাত জানান, নাকতলার বাড়ি থেকে ২০টি জমির দলিল, তিনটি ল্যাপটপ, ১৪টি মোবাইল, ৬টি হার্ড ডিস্ক এবং পেন ড্রাইভ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর রাজ্য জুড়ে তল্লাশিতে মিলেছে ২ কিলোগ্রাম সোনা এবং ৬০ লক্ষ টাকা। সিআইডি সূত্রের খবর, রাজ্য দুর্নীতিদমন শাখাকে ‘ভারতী-ঘনিষ্ঠ’ পুলিশকর্মীদের আয় ও সম্পত্তি খতিয়ে দেখতে বলা হবে।
চন্দনের অভিযোগে যাঁর নাম ছিল, সেই সোনা ব্যবসায়ী বিমল ঘোড়ই এখন সিআইডি হেফাজতে। সিআইডি-র দাবি, বিমল জানিয়েছেন, এই ছকে ৪ কেজি সোনা কিনেছিলেন তিনি। দাসপুরের তৎকালীন ওসি প্রদীপ রথ-সহ কয়েকজন পুলিশের নামেও অভিযোগ করেছেন চন্দন। তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সিআইডি নিশানায় থাকা পুলিশ অফিসাররা অবশ্য মন্তব্যে নারাজ। ‘ক্লোজ’ হয়ে যাওয়া প্রদীপ শুধু বলেন, ‘‘আমি নির্দোষ। তদন্তে সহযোগিতা করব। প্রকৃত অপরাধী ধরা পড়বে।’’