Center

রাজ্যকে পাশ কাটিয়ে উপভোক্তার দোরগোড়ায় কেন্দ্র

সম্প্রতি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচির আওতায় ‘টপ-টু-টোটাল’ প্রকল্প চালু করল কেন্দ্রীয় সরকার। এতদিন টোম্যাটো, পেঁয়াজ এবং আলু দূরবর্তী এলাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হলে পরিবহণ এবং গুদামজাত করার খরচের ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিত কেন্দ্র।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২০ ০৫:৫৫
Share:

প্রতীকী ছবি

সরাসরি উপভোক্তার কাছে প্রকল্প নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে কেন্দ্র। কৃষিক্ষেত্রে ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচির আওতায় এমন ভাবেই একটি প্রকল্প কার্যকর হল পশ্চিমবঙ্গে, যাতে তার সুবিধা সরাসরি কেন্দ্রের থেকেই পেয়ে যাবেন উপভোক্তা।

Advertisement

সম্প্রতি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ কর্মসূচির আওতায় ‘টপ-টু-টোটাল’ প্রকল্প চালু করল কেন্দ্রীয় সরকার। এতদিন টোম্যাটো, পেঁয়াজ এবং আলু দূরবর্তী এলাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতে হলে পরিবহণ এবং গুদামজাত করার খরচের ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দিত কেন্দ্র। এ বার টোম্যাটো, পেঁয়াজ এবং আলুর পাশাপাশি প্রায় সব ধরনের আনাজ এবং ফলে একই সুবিধা দেবে কেন্দ্র। প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে সরাসরি কেন্দ্রের কাছে নথি পাঠালেই চলবে। ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের (ডিবিটি) মাধ্যমে সরকারি সুবিধা পেয়ে যাবেন উপভোক্তা।

এই প্রকল্পে তালিকাভুক্ত আনাজ-ফলের উৎপাদন যেখানে বাড়তি, সেখান থেকে কেউ পণ্যবাহী গাড়িতে করে আনাজ-ফল নিয়ে গিয়ে সর্বাধিক তিন মাসের জন্য মজুত করে তা বাজারজাত করতে পারেন। সেই প্রক্রিয়ার খরচই ভর্তুকি আকারে পাবেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী।

Advertisement

টপ টু টোটাল


• ‘টপ’-এর আওতায় টোম্যাটো, পেঁয়াজ
এবং আলু


‘টোটাল’ এর আওতায়


• ফ্রেঞ্চ বিনস, করলা, বেগুন, ক্যাপসিকাম, গাজর, ফুলকপি, কাঁচা লঙ্কা, ঢ্যাঁড়শ, আম, কলা, পেয়ারা, কিউই, লিচু, পেঁপে, লেবু, আনারস, বেদানা, কাঁঠাল

• কৃষি মন্ত্রক অথবা রাজ্য সরকারের সুপারিশক্রমে ভবিষ্যতে আরও আনাজ এবং ফল প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে

সূত্রঃ কেন্দ্রীয় সরকার

তবে এই প্রকল্পের লাভের কথা অস্বীকার না-করলেও রাজ্য প্রশাসনের একাংশের মতে, ‘কোল্ড চেন’ বা পূর্ণাঙ্গ সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার ঘাটতি রয়েছে। শুধু গুদামে মজুত রাখার ভর্তুকি দিলে সমস্যা মিটবে না। সার্বিক সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার পরিকাঠামো তৈরিতে পুঁজি ও ভর্তুকি জরুরি।

কেন্দ্র জানাচ্ছে, লকডাউন পর্বে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে গিয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন। এক কৃষি বিশেষজ্ঞের কথায়, “ ধরা যাক কোথাও প্রচুর লঙ্কা হয়েছে। সেখানকার চাহিদার তুলনায় সেই ফলন অনেক বেশি হওয়ায় কেজিপ্রতি ন্যূনতম দামে তা বিক্রি করতে বাধ্য হবেন কৃষক। এতে হয় তাঁর চাষের খরচ উঠবে না, নচেৎ ফসল নষ্ট হবে। অথচ রাজ্যের অন্যত্র সরবরাহ কম থাকায় লঙ্কার দর লাগামছাড়া। এই প্রকল্পে সেই সমস্যা মিটবে।”

আপাতত ছ’মাসের জন্য এই প্রকল্প শুরু হয়েছে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত সমবায় সমিতি, কৃষক, লাইসেন্সপ্রাপ্ত কমিশন এজেন্ট, রফতানিকারক, রাজ্য বিপণন অথবা সমবায় ফেডারেশন, পাইকাররা পরিবহণ এবং গুদামজাত করার খরচের নথি কেন্দ্রকে পাঠালে সংশ্লিষ্টের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে (ডিবিটি) কেন্দ্রের টাকা পৌঁছে যাবে।

রাজ্যের সবুজ সঙ্কেত ছাড়া কেন্দ্রের বড় প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া রাজ্যবাসীদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। কেন্দ্র-রাজ্য টানাপড়েনের কারণে আয়ুষ্মান ভারত, পিএম কিসান, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার মতো একাধিক প্রকল্পের সুবিধা রাজ্যবাসীর অধরা থেকে গিয়েছে। কৃষি প্রকল্প ‘টপ টু টোটাল’ সেই দড়ি টানাটানি এড়িয়ে উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে যাবে বলে দাবি কেন্দ্রের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement