মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার বিক্রি মামলায় নয়া মোড়। আদালত চাইলে তারা তদন্ত করতে প্রস্তুত বলে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে জানাল সিবিআই।
মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার বিক্রি মামলায় নয়া মোড়। আদালত চাইলে তারা তদন্ত করতে প্রস্তুত বলে মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টে জানাল সিবিআই। তাদের আইনজীবী অনির্বাণ মিত্র আদালতকে জানান, মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার বিক্রি নিয়ে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে আদালত চাইলে তার তদন্ত করতে প্রস্তুত সিবিআই। যদিও মঙ্গলবার এ নিয়ে কোনও নির্দেশ দেয়নি হাই কোর্ট। ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা শুধু সব পক্ষকে অবস্থান জানাতে বলেছে।
রাজ্য দুগ্ধ ফেডারেশন ও কেভেন্টার্স নামে একটি সংস্থা যৌথ ভাবে ব্যবসা করত মেট্রো ডেয়ারির। ডেয়ারিতে দুই সংস্থারই শেয়ার ছিল। ব্যবসা সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণের জন্য ২০০ কোটি লগ্নির প্রস্তাব দেয় কেভেন্টার্স। যার দরুণ রাজ্যকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে হত মেট্রোতে। কিন্তু দুগ্ধ ফেডারেশন তা অপারগ থাকায় নিজেদের অধিকারে থাকা ৪৭ শতাংশ শেয়ার তারা কেভেন্টার্সকে বিক্রি দেয়। যার অর্থমূল্য ছিল ৮৫ কোটি টাকা। এর ফলে মেট্রোর ১০০ শতাংশের অধিকারী হয় কেভেন্টার্স। কিন্তু কিছু দিন পরে তারাও ১৫ শতাংশ শেয়ার ১৭০ কোটি টাকায় সিঙ্গাপুরের একটি সংস্থাকে বিক্রি করে দেয়। যা নিয়েই শুরু হয় বিতর্ক। শেয়ার বিক্রিতে অনিয়ম হয়েছে এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী।
তাঁর বক্তব্য ছিল, নিয়ম মেনে বিক্রি করা হয়নি মেট্রো ডেয়ারি। রাজ্যের যদি বিক্রিরই মনোভাব ছিল, তবে তারা নিজেদের ভাগের শেয়ার কেভেন্টার্সকে বিক্রি না করে, সরাসরি সিঙ্গাপুরের সংস্থাকে শেয়ার বিক্রি করতে পারত। তা হলে রাজ্যের কোষাগারে ৫০০ কোটি টাকা আসত। এই ঘুরপথে শেয়ার বিক্রির পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না তা মীমাংসার জন্যই হাই কোর্টে মামলা করেন অধীর। দীর্ঘ দিন ওই শুনানি চলে উচ্চ আদালতে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামলাটি। সেই সময়ই সিবিআই তদন্তের কথা জানান কেন্দ্রের আইনজীবী। আদালত জানায়, এ নিয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বর সব পক্ষকে নিজেদের অবস্থান জানাতে হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১৬ ডিসেম্বর।
যদিও এ অনিয়মের অভিযোগ রাজ্যের তরফ থেকে খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর জানায়, শেয়ার বিক্রির জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছিল। কোনও সংস্থাই কেনার জন্য এগিয়ে না আসায় কেভেন্টার্সকে বিক্রি করা হয়। এবং রাজ্য মন্ত্রিসভা তাতে সায় দিয়েছিল। স্বল্প মূল্যের যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। তৎকালীন বাজার মূল্য অনুসারেই বিক্রি করা হয়েছে মেট্রো ডেয়ারিকে। তবে এখন যদি ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত, তবে তা রাজ্যের পক্ষেই অস্বস্তিকর হবে। যদিও এই ঘটনায় আগেই তদন্ত শুরু করেছে ইডি। হাই কোর্টে মামলার পক্ষ হিসাবে তারাও যুক্ত রয়েছে।