ফাইল ছবি
জট অব্যাহতই রইল প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায়। নিয়োগে কারা উপযুক্ত, কাদের প্রাধান্য বেশি কিংবা ওই পদে যোগ্যতার মাপকাঠিই বা কী, রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ডিএলএড আর বিএড চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে এখন এই সমস্যায় প্রকট হয়েছে। এর ফলে প্রায় ১৫ লক্ষ চাকরিপ্রার্থীর ভাগ্য ঝুলে কলকাতা হাই কোর্টে। শনিবার হাই কোর্টে এ নিয়েই হয় প্রায় পাঁচ ঘণ্টার দীর্ঘ শুনানি হয়। যদিও বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিশেষ বেঞ্চ এ নিয়ে কোনও রায় ঘোষণা করেনি। আগামী মাসে ফের মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
মূলত ডিএলএড উত্তীর্ণ প্রার্থীরাই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এই নিয়মই মেনে চলছিল রাজ্য শিক্ষা সংসদ। কিন্তু ২০১৮ সালে এনসিইআরটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, বিএড উত্তীর্ণরাও ওই পরীক্ষায় বসার যোগ্যতা রাখে। অর্থাৎ তাঁদেরও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসার অধিকার রয়েছে। এনসিইআরটি-র ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেন ডিএলএড প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএড করা প্রয়োজন। অথচ ওই প্রার্থীরা এখন প্রাথমিকের নিয়োগেও ঢুকে পড়ছেন। ফলে এতে ডিএলএড-দের অধিকার হনন হচ্ছে। যা নিয়ে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। পরে মূল ওই মামলাটির সঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয় যুক্ত হয়। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ জানায়, বিএড-দের জন্য প্রাথমিক নিয়োগে কেন্দ্রীয় আইন মানা হবে। তবে সে ক্ষেত্রে ওই প্রার্থীদের স্নাতকে ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা জরুরি।
এ নিয়েও তৈরি হয় সমস্যা। একাধিক প্রশ্ন উঠে আসে। প্রথমত, ২০১১ সালের আগে যাঁরা স্নাতক হয়েছেন তাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন কি না? দ্বিতীয়ত, যাঁরা স্নাতকে ৫০ শতাংশ পাননি অথচ স্নাতকোত্তরে ৫০ শতাংশ পেয়েছেন, তাঁরা যোগ্য কি না? প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত এই সব বিষয়গুলিকে একত্রিত করেই শনিবার শুনানি হয় আদালতে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য, ডিএলএড এবং বিএড ডিগ্রিধারী— তিন পক্ষের বক্তব্য শোনেন। তবে শনিবার শুনানি শেষ হয়নি। বিএড প্রার্থীদের আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এনসিইআরটি-র নিয়ম মেনে বিএড ডিগ্রিধারীদের চাকরি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। রাজ্যে বর্তমানে ১২ লক্ষ বিএড উত্তীর্ণ রয়েছেন। এই নিয়োগে তাঁদেরও সুযোগ পাওয়া উচিত।’’ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে ৪ অক্টোবর।