—প্রতীকী ছবি।
বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা তলব করল কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ, ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওই হলফনামা দাখিল করতে হবে।
বেসরকারি স্কুলের অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধির অভিযোগে এই মামলাতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, বৃহত্তর সমস্যা। আর্থিক পরিস্থিতির উপরে নির্ভর করে বেসরকারি স্কুলের বেতন নির্ভর করা উচিত। স্কুলের বকেয়া বেতন অভিভাবকদের দিতে হবে, এমন পর্যবেক্ষণও বিচারপতির মুখে শোনা গিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কোনও নির্দেশ তিনি দেননি।
অভিভাবকদের করা মামলায় তাঁদের আইনজীবী সৌম্য মজুমদার কোর্টে জানান, আগের তুলনায় ৭০ শতাংশ ফি বৃদ্ধি হয়েছে। বর্তমানে এত বেশি টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। বেসরকারি স্কুলের ফি নির্ধারণে রাজ্য সরকারের ভূমিকা আছে। কিন্তু সরকার কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারি স্কুল এত বেশি টাকা নিচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিচারপতি বসুর প্রশ্ন, সরকারি স্কুলে বেতন বাড়ানো হয় না। তার দায় বেসরকারি স্কুল নেবে কেন? বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির উপরে স্কুলের বেতন নির্ভর করা উচিত। রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতির প্রশ্ন, তারা কি বেসরকারি স্কুলের ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে ওয়াকিবহাল? বেসরকারি স্কুলের আইনজীবী বিশ্বরূপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, সিবিএসই, আইসিএসই এবং মুক্ত বিদ্যালয়গুলি রাজ্যের শিক্ষা দফতরের আওতায় পড়ে।
প্রসঙ্গত, স্কুলের ফি বৃদ্ধি নিয়ে অভিভাবকদের আন্দোলন এবং আইনি লড়়াই এই প্রথম নয়। অতিমারি পর্বে ফি কমানোর দাবিতে তাঁরা আন্দোলন এবং মামলা করেছিলেন। সে সময় আদালতের নির্দেশে স্কুলের ফি-র ক্ষেত্রে ছাড় এবং বকেয়া টাকা কিস্তিতে দেওয়ার সুযোগও পেয়েছিলেন তাঁরা। পরবর্তী কালে ওই মামলায় স্কুলগুলি অভিযোগ করেছিল, অতিমারি পরিস্থিতি কেটে গেলেও বহু অভিভাবক টাকা শোধ করেননি। অনেকে কোর্টের নির্দেশ মেনে কিস্তির টাকা দেননি।
অভিযোগ, অভিভাবকদের অনেকেই সরকারি স্কুলের সঙ্গে বেসরকারি স্কুলের বেতনের তুলনা করছেন। সরকারি স্কুলে রাষ্ট্রের ভর্তুকি থাকে। তাই কোনও ভাবেই দু’টি সমান হতে পারে না। সরকারি স্কুলের প্রতি আগ্রহ থাকলে কেন ওই অভিভাবকেরা বেসরকারি স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করেছিলেন সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।