মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজস্ব চিত্র
নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হলফনামা গ্ৰহণ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী মুখ্যমন্ত্রীর হলফনামা জমা দেওয়ার অনুমতি চান বৃহত্তর বেঞ্চের কাছে। কিন্তু বুধবার সেই অনুমোদন দেননি বেঞ্চের বিচারপতিরা। তাঁরা প্রথমে ওই বিষয়টিতে আপত্তি জানালেও পরে অবশ্য বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্য দিকে, মামলাটি অন্যত্র সরানো নিয়ে বুধবারও নিজের যুক্তি তুলে ধরেন অভিযুক্তদের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি।
বুধবার হাই কোর্টে নারদ মামলার শুনানির শুরু হতেই হলফনামা জমা দেওয়ার আবেদন জানান রাজ্যের এজি এবং মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী রাকেশ। মামলার বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে প্রধান বিচারপতি তাতে আপত্তি জানান। পাল্টা যুক্তি হিসাবে রাজ্যের এজি বলেন, "এখন হলফনামা জমা দেওয়া যাবে না বলা হচ্ছে। কিন্তু আইন তা বলছে না। নিয়ম অনুযায়ী মামলার চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার অধিকার রয়েছে।" কিশোরের ওই যুক্তির পরে পাল্টা সওয়াল করেন সিবিআইয়ের কৌঁসুলি তুষার মেহতা। তিনি বলেন, ২৪ মে নোটিস জারির আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ সম্পর্কিত হলফনামা জমা দিয়েছিল সিবিআই। এরপর ২ জুন তারা একটি হলফনামা দাখিল করেছে। এখন আবার হলফনামার বিষয় আসছে কেন?" এসজি আরও বলেন, "৪ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার আবেদন করতে পারে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ আসার পরে কি তা সম্ভব হয়? এটা আদালতের নিয়মও হতে পারে না।" এর জবাবে রাকেশ বলেন, "এটি ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। এই হলফনামাটি এমন এক অভিযুক্তের পক্ষে দায়ের করা হয়েছে, যাঁর সঙ্গে মামলার কোনও সম্পর্ক নেই।" এরপর তুষার মেহতা পাল্টা বলেন, "আমার সওয়াল শেষ করার পরে এই ধরণের হলফনামা দিয়ে শূন্য স্থান পূরণ করতে পারবেন না।" হলফনামা ঘিরে বাদী ও বিবাদী পক্ষের তর্ক তুঙ্গে উঠলে বিচারপতিরা তাতে রাশ টানেন। তাঁরা জানান, এই হলফনামা জমা নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে পরে তর্ক হবে। আপাতত সিঙ্ঘভি সওয়াল করবেন।
বিগত দু'দিনের মতো মামলা অন্যত্র সরানো নিয়ে বুধবারও বিরোধিতা করেন সিঙ্ঘভি। বিশেষ আদালতের রায়কে হাতিয়ার করেই তিনি সওয়াল করেন। বলেন, "১৭ মে নিম্ন আদালতে বিচার হয়েছিল ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাই সেখানে প্রভাবের তত্ত্ব খাটে না। সিবিআইও তখন এ ধরনের কোনও অভিযোগ তোলেনি। ওই দিনের রায়ে বিশেষ বিচারক পুরোপুরি জ্ঞাত ছিলেন এবং তাঁর আদেশে সমস্ত কিছুই ছিল।" বুধবারও এই মামলা সেভাবে এগোয়নি। বৃহস্পতিবার ফের শুনানি রয়েছে।