ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে পরিবহণ দফতরের সঙ্গে সংঘাতে বেসরকারি বাসমালিকরা। — ফাইল চিত্র।
ভাড়া বৃদ্ধি না করলে তিন সপ্তাহের মধ্যে বেসরকারি বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়ার হুমকি দিল বাসমালিকদের সংগঠনগুলি। শুক্রবার ময়দান তাবুতে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বাসভাড়া সংক্রান্ত এক বৈঠক হয়। মূলত বাস এবং অনলাইন ক্যাবের ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে হাজির হন।
অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি, অনলাইন ক্যাব অপারেটার্স গিল্ড, নর্থ বেঙ্গল প্যাসেঞ্জার্স ট্রান্সপোর্ট অনার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি এবং পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। বৈঠকে মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, ভাড়া বৃদ্ধি তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট বেসরকারি বাস-মিনিবাসের ভাড়া সংক্রান্ত একটি রায় দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ, রাজ্য জুড়ে কার্যকর করতে হবে ২০১৮ সালের সরকার নির্ধারিত ভাড়া। প্রতিটি বাসে ভাড়ার তালিকাও টাঙাতে হবে। সেই নির্দেশ মতোই পরিবহণ দফতর কাজ করবে বলে বাসমালিক সংগঠনগুলিকে জানিয়ে দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী।
তবে পাল্টা জবাবে সিটি সাবারবান বাস সার্ভিসেসের তরফে টিটু সাহা বলেন, “করোনা সংক্রমণের পর বাস শিল্পের কোমর ভেঙে গিয়েছে। এ ভাবে চলতে থাকলে বেসরকারি বাস পরিষেবা পুরোপুরি উঠে যাবে। তাই বাসের ভাড়া বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছে। যদি ভাড়া না বৃদ্ধি হয় তা হলে আগামী তিন সপ্তাহ পর আমরা সব বেসরকারি বাস রাস্তা থেকে তুলে নেব।” তিনি আরও বলেন, “সরকারি ভাবে পাঁচ বছর আগে ভাড়া বৃদ্ধি হয়েছিল, কিন্তু ডিজেলের মূল্য দিন প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়াও বাস চালানোর জন্য যে সমস্ত শ্রমিকদের ওপর আমাদের নির্ভর করতে হয় তাদের বেতন আর আগের জায়গায় আটকে নেই। এই সব বিষয়গুলির দিকে নজর দিয়েই আমরা রাজ্য সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলব।” বাসমালিকদের এমন হুমকিকে খুব বেশি আমল দিতে চায় না পরিবহণ দফতর। তাঁদের একাংশের কথায়, এই ধরনের হুমকি বেসরকারি বাসমালিকরা আগেও দিয়েছেন। কিন্তু সরকারের কঠোর পদক্ষেপে বার বার তাদের পিছু হটতে হয়েছে। বেসরকারি বাসমালিকেরা ধর্মঘটের পথে গেলে সরকারও তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
বেসরকারি বাসমালিকদের কথায়, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বেসরকারিকরণ মেনে নিয়েছে পরিবহণ দফতর। তাই বাসভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টিও বেসরকারি বাসমালিকদের ওপরেই ছেড়ে দেওয়া হোক। বর্তমান বাজারদর এবং সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই তাঁরা বাসভাড়া ঠিক করবেন। পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, এমন কোনও প্রস্তাব বা ভাবনা দফতরে আলোচিত হয়নি। তাই এ বিষয়ে কথা বলার কোনও যুক্তি হয় না।