মঙ্গলবার দুপুরে রাজভবনে গিয়েছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানেই রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। তারপরেই টুইট করে বাজেট অধিবেশনের ঘোষণা করেন ধনখড়। গত কয়েকদিন ধরেই বিধানসভার বাজেট অধিবেশন নিয়ে রাজভবন–নবান্নের দড়ি টানাটানি চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন প্রশাসনের কর্তারা।
বাজেট অভিবেশন দুপুরেই, ঘোষণা করলেন রাজ্যপাল জগদীপ খনখড়। প্রতীকী ছবি
অবশেষে আগামী সোমবার অর্থাৎ ৭ মার্চ দুপুর দুটোয় বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। এমনটাই টুইট করে জানিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। মঙ্গলবার দুপুরে রাজভবনে গিয়েছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সেখানেই রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়। তারপরেই টুইট করে বাজেট অধিবেশনের ঘোষণা করেন ধনখড়। গত কয়েকদিন ধরেই বিধানসভার বাজেট অধিবেশন নিয়ে রাজভবন–নবান্নের দড়ি টানাটানি চলছিল। কিন্তু মঙ্গলবার বিষয়টির নিষ্পত্তি হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন প্রশাসনের কর্তারা।
উল্লেখ্য, এ বারের বাজেট অধিবেশন শুরু করতে প্রথমে যে ফাইলটি রাজভবনে পাঠানো হয়েছিল তাতে মন্ত্রিসভার অনুমোদন না থাকায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। পরিষদীয় দফতরের সেই ফাইলটিতে শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন ছিল বলে জানিয়েছিলেন তিনি। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু করার ফাইল পাশ করিয়ে পাঠানো হয় রাজভবনে। সেই ফাইল পাঠানোর পরে ২৪ ফেব্রুয়ারি মুখ্যসচিবকে রাজভবনে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল। কিন্তু মুখ্যসচিব তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে না গেলে টুইট করে বিধানসভার অধিবেশন অনুষ্ঠানিক ভাবে আহ্বান করেন তিনি।
সেই টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৭ মার্চ রাত ২টোয় বিধানসভার অধিবেশন ডাকা হল। ওই সময়ে বিধানসভার অধিবেশন শুধু ব্যতিক্রমী নয় ঐতিহাসিক। কিন্তু এটাই সরকারের সিদ্ধান্ত।’পরে আরও একটি টুইট করে মধ্যরাতে অধিবেশন ডাকার ব্যাখ্যা দেন রাজ্যপাল। সেই টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, ‘মধ্যরাতের অধিবেশনের সময় নির্ধারণের অস্বাভাবিকতা লক্ষ করেই মুখ্যসচিবকে জরুরি ভিত্তিতে তলব করা হয়েছিল। মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে না পারায় রাতে সভার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’ এমন নজিরবিহীন অধিবেশন ডাকার পরেই মুখ্যমন্ত্রী ফোনে কথা বলেন রাজ্যপালের সঙ্গে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে রাজভবনকে জানানো হয়, ছাপার ভুলেই দিনের বদলে রাতে অধিবেশনের কথা লেখা হয়েছে। তাই রাজ্যপাল নিজের ক্ষমতাবলে তাতে সংশোধন করে দিন।
তাতেও রাজ্যপাল নিজের অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দেন, মন্ত্রিসভা বাজেট অধিবেশনে সায় দিলেই তাঁর পক্ষে অধিবেশন আহ্বানের সময় বদল করা সম্ভব। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাজেট অধিবেশনের প্রস্তাব ফের একবার পাশ করানো হয়। সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকায় বিরক্তি প্রকাশ করেন মমতা। বৈঠকে সতীর্থদের উদ্দেশে জানিয়েছিলেন, বিষয়টি ছাপার ভুল মাত্র। রাজ্যপাল চাইলে তা সংশোধন করে নিতেই পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে এ বার আর রাজভবনের সঙ্গে সঙ্ঘাতে যেতে চায়নি নবান্ন। তাই সোমবারই মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ফাইল পাঠিয়ে দেওয়া হয় রাজভবনে। আর মঙ্গলবার রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুখ্যসচিব। তাতেই রাজভবন-নবান্নের মধ্যে জমে থাকা বরফ গলতে শুরু করে বলে মনে করা হচ্ছে। বাজেট অধিবেশন আহ্বান করে রাজ্যপালও স্বস্তি দেন নবান্নকে। সব ঠিকঠাক চললে আগামী সোমবার রাজ্যপালের বক্তৃতা দিয়ে শুরু হবে এ বছরের বাজেট অধিবেশন।