স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।
রং বদলানোর প্রস্তাব করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু ‘নিজেদের রং’ না বদলানোর সিদ্ধান্তে অনড় ছিল রাজ্যও। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে (এনএইচএম) গত বছর জুলাই থেকে কেন্দ্রের যে বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে, তার নেপথ্যে অন্যতম কারণ এই রং। সূত্রের দাবি, অবশেষে রাজ্যের ‘নীল-সাদা’ রংয়েই সায় দেওয়ার বার্তা কেন্দ্রের থেকে পেয়েছে রাজ্য। ফলে বরাদ্দের জট কিছুটা কাটার আশাও করছেন প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
অভিযোগ ছিল, দেশের অন্যান্য রাজ্যে ‘আয়ুষ্মান ভারত-হেল্থ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ নামটি ব্যবহার করা হলেও, এ রাজ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে ‘সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামটি। আবার সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রগুলির জন্য বিশেষ হলুদ রংয়ের প্রস্তাব মানেনি রাজ্য, বদলায়নি নীল-সাদা রং। গত বছর জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা এই সব ‘ব্র্যান্ডিং’ মানতে লিখিত
পরামর্শও দিয়েছিলেন রাজ্যকে। কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত প্রকল্পগুলির ‘ব্র্যান্ডিং’-কে মান্যতা দিতে অর্থ মন্ত্রকের নির্দিষ্ট বিধি রয়েছে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় দল ঘুরে গিয়েছে রাজ্যে। এসেছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণও। তার পরেও অনড় ছিল নবান্ন। সূত্রের দাবি, সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে
নীল-সাদা রং নিয়ে তাদের যে আর আপত্তি নেই, তা রাজ্যকে জানিয়েছে কেন্দ্র। প্রশাসনের অন্যতম এক শীর্ষকর্তার কথায়, “রাজ্যে প্রায় ১৩ হাজার এমন পরিকাঠামো রয়েছে। যেগুলিতে রং করা হয়ে গিয়েছে। রং বদলাতে হলে বিপুল খরচ হত।’’
তবে প্রশাসনিক সূত্র জানাচ্ছে, নাম সংক্রান্ত ‘ব্র্যান্ডিং’-এর ‘ফাঁড়া’ এখনও কাটেনি। তা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চলছে। যদিও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ‘লোগো’ বসানোর কাজ হচ্ছে রাজ্যে। সংশ্লিষ্ট মহলের অনুমান, জন পরিষেবার কথা মাথায় রেখে এ ব্যাপারেও কেন্দ্র তাদের অবস্থান থেকে সরে এলে বরাদ্দ-জট কাটবে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির আওতায় ‘আয়ুষ্মান ভারত-হেল্থ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার’ গড়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল কেন্দ্র। আধিকারিক মহল জানাচ্ছে, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা করে পাওয়ার কথা প্রতি বছর। তার মধ্যে ৬০% বা কমবেশি ১৮০০ কোটি টাকা কেন্দ্র দেয় এবং বাকি ৪০% বা প্রায় ১২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হয় রাজ্যকে। গত বছরের ২৩ জুলাই মিশন-খাতে কেন্দ্রের শেষ বরাদ্দ পেয়েছিল রাজ্য।