কী হবে মুকুলের? — ফাইল চিত্র।
বিজেপিতে ফিরতে দিল্লিতে গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে আছেন মুকুল রায়। কিন্তু গেরুয়া শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলা বা দেখা করার সুযোগ হয়নি তাঁর, এমনটাই বিজেপি সূত্রের খবর। আর সেই আবহেই বাংলার বিজেপি পরিষদীয় দল জানিয়ে দিল, মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে তাদের করা আবেদন কোনও ভাবেই প্রত্যাহার করা হবে না। ২০২১ সালের ২ মে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে কৃষ্ণনগর উত্তর আসন থেকে জয়লাভ করেন মুকুল। কিন্তু ১১ জুন, পুত্র শুভ্রাংশু রায়কে নিয়ে তৃণমূল ভবনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে যোগ দেন তাঁর পুরনো দলে।
এর পরেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি নিয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্ট এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হন। স্পিকার তাঁর ৯০ পাতার রায় ঘোষণা করলেও আদালতে শুভেন্দুর আবেদন এখনও বিচারাধীন রয়েছে।
১৭ এপ্রিল রাতে আচমকাই জানা যায় হঠাৎ রহস্যজনক ভাবে অন্তর্ধান হয়ে গিয়েছে মুকুলের। বাবার ‘নিখোঁজ’ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় দমদমের এয়ারপোর্ট থানা এবং স্থানীয় বীজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মুকুলের পুত্র শুভ্রাংশু। ওই দিন রাতেই দিল্লি থেকে এক ভিডিয়ো বার্তায় মুকুল জানান স্বেচ্ছায় দুজনকে নিয়ে দিল্লি এসেছেন তিনি। পর পর কয়েক দিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে মুকুল জানান, আবারও বিজেপিতে যোগ দিয়ে কাজ করতে চান তিনি। তাই বিজেপি শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লিতে এসেছেন।
আর থাকতে চান না বাংলার শাসকদল তৃণমূলে। এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতাকে। সুকান্ত সাফ জানিয়ে দেন, মুকুল যখন দলত্যাগ করেছিলেন তখন তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। তাই তার বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই নেবেন। আর বিধানসভার বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, দলছুট কোনও বিধায়ককে নিয়ে তিনি আগ্রহী নন।
কিন্তু মুকুলের মরিয়া হয়ে বিজেপিতে ফিরতে চাওয়ার চেষ্টায়, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক পদ খারিজের ক্ষেত্রে কি আগের মতোই অনড় থাকবে বিজেপির পরিষদীয় দল? না কি দলে ফিরতে চাওয়ার খবরে তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে বিরোধী দলনেতার দফতর জানিয়েছে, “আবেদন প্রত্যাহারের কোনও প্রশ্নই নেই।” অপর দিকে, এই মামলায় মুকুলের আইনজীবী সায়ন্তক দাস বলেন, “মুকুলবাবু বরাবরই বলে আসছেন তিনি বিজেপিতে রয়েছেন। আজও তিনি সেই কথাতেই দাঁড়িয়ে আছেন। আমি তাঁর হয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সেই কথাই জানিয়েছি।”