—প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোকাবিলায় কি মহিলা মুখকে সামনে রেখেই আগামী দিন লড়তে চলেছে বিজেপি! দলে প্রাথমিক আলোচনা থেকে তেমন ইঙ্গিতই মিলছে।
সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলির ফলাফল বিশ্লেষণে মনে করা হচ্ছে, মহিলা ভোট প্রায় ঢালাও গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বাক্সে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের’ সুফল। রাজ্যে তৃণমূলের পক্ষে মহিলা সমর্থনের এই ‘ঝড়’ সামলাতে মহিলা মুখকেই সামনে আনতে চায় বঙ্গ বিজেপি। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ায় বিজেপির রীতি অনুযায়ী তিনি আর রাজ্য সভাপতি পদে থাকতে পারবেন না। সেই জায়গায় কোনও লড়াকু মহিলা মুখকে সামনে আনার ভাবনা-চিন্তা চলছে বিজেপিতে।
সূত্রের খবর, পরবর্তী রাজ্য সভাপতির দৌড়ে আছেন রাজ্যের দুই সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় ও অগ্নিমিত্রা পাল। দু’জনেরই এর আগে মহিলা মোর্চা সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে। আলোচনা হচ্ছে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর নামও। তবে তাঁর ব্যক্তি জীবনে কিছু সমস্যা থাকায় এই মুহূর্তে তিনি হয়তো দায়িত্ব নিতে পারবেন না।
এ ছাড়াও দৌড়ে আছেন মালতী রাভা রায় ও দেবশ্রী চৌধুরী। এর মধ্যে দেবশ্রী দিলীপ ঘোষের জমানায় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন। তিনি সঙ্ঘ পরিবারের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ। মালতী এলাকায় ডাকাবুকো নেত্রী বলেই পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পদ্ম-শিবিরের পরিচিত মুখ। নয়ের দশক থেকে রাজ্য বিজেপির নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। বতর্মানে তিনি তুফানগঞ্জের বিধায়ক। লোকসভা ভোটেও বিজেপি এগিয়ে রয়েছে তুফানগঞ্জ বিধানসভা এলাকায়। দেশে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ৩৩% মহিলা সংরক্ষণের বিল পাশ করলেও বাংলায় লোকসভা ভোটে কেন আরও বেশি সংখ্যায় মহিলা মুখ রাখা হল না, সেই প্রশ্ন আছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরেই। সব মিলিয়ে রাজ্য বিজেপিতে এখন মহিলা মুখের সন্ধান চলছে।
তবে রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের সম্পূর্ণ ভার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। সূত্রের খবর, শীঘ্র নতুন সর্বভারতীয় সভাপতি পেতে পারে বিজেপি। তাঁর নেতৃত্বাধীন নতুন কমিটিই নির্বাচন করবে বঙ্গ বিজেপির নতুন অধিনায়ককে। বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্বের বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে প্রথম পছন্দ কোনও মহিলা মুখ। তবে সেই মুখ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি মাপকাঠি রাখছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য বিজেপির গোষ্ঠী-কোন্দলের কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে এখনও অজানা নয়। তাই কোনও গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে কাউকে বেছে নিতে নারাজ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বরং, তাঁদের নজরে গোষ্ঠী-নিরপেক্ষ কোনও নেতৃত্ব। এ ছাড়া, দলের পুরনো কর্মী, দুঃসময়ে সংগঠন সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে এবং সঙ্ঘের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ও মাথায় রাখতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে সুকান্তের মতো মিতভাষী, বাহ্যিক ভদ্র ব্যবহার, শিক্ষিত কোনও মুখ বাছাইয়ের উপরেও জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের দলে নিশ্চয় মহিলাদের প্রতিষ্ঠা, গুরুত্ব, সম্মান আছে। কিন্তু বিজেপি লিঙ্গনির্ভর রাজনীতি করে না। আমাদের কাছে নেতা নয়, নীতির লড়াই। কে রাজ্য সভাপতি হবেন, সেটা দলের সিদ্ধান্ত। আর দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”