State News

এক বছরে গড় ভোটার বাড়ল ৩২টি কেন্দ্রে

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গড় সংখ্যার থেকে বেশি ভোটার রয়েছে রাজ্যে এমন বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যা ২০১৮ সালে ছিল ১৩২টি।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৫১
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

পশ্চিমবঙ্গে সাধারণ ভাবে ভোটারের সংখ্যা ১০০ জন নাগরিক পিছু ৬৯ জন। কিন্তু ২০১৯-এর শেষ সংশোধিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৬৪টিতে সেই অনুপাত সাধারণ গড়ের চেয়ে বেশি। এই বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে ভোটারের সংখ্যা ১০০ জন নাগরিক পিছু ৭০ থেকে ৮৬ জন।

Advertisement

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, গড় সংখ্যার থেকে বেশি ভোটার রয়েছে রাজ্যে এমন বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যা ২০১৮ সালে ছিল ১৩২টি। এক বছরের মধ্যে সেই সংখ্যা ৩২টি বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক বলেই মনে করছেন কমিশনের একাংশ। কারণ, ২০১৮ সালেও রাজ্যে ভোটার সংখ্যার অনুপাত ছিল ১০০ নাগরিক পিছু ৬৯ জন।

কমিশন সূত্রের খবর, বনগাঁ, রানাঘাট, বসিরহাট, ডায়মন্ড হারবার, জয়নগর, মুর্শিদাবাদ, মালদহের দু’টি লোকসভা, কোচবিহারের মতো সীমান্তবর্তী এলাকায় ভোটার সংখ্যা গড়ের চেয়ে বেশি। এর পিছনে অনুপ্রবেশের একটা ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকের অভিমত। তবে কমিশনের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, শুধুঅনুপ্রবেশের কারণেই এই বৃদ্ধি হয়েছে, এমনটা ধরে নেওয়া ঠিক হবে না।

Advertisement

আরও পড়ুন: ভোটার তালিকা সংশোধনের আর্জি ছাড়াল ৮০ লক্ষ

ওই আধিকারিকদের মতে, জনসংখ্যা-ভোটার অনুপাতে এই বৃদ্ধি ঘটে অভ্যন্তরীণ জনসংখ্যার বদল হলে বা অন্য কেন্দ্র থেকে লোকজন এসে সেখানে বসবাস শুরু করলে ও ভোটার তালিকায় নাম তোলালে। যেমন কলকাতা-উত্তর লোকসভা কেন্দ্রে জনসংখ্যার মাত্র ৫৯ শতাংশ ভোটার। এই কেন্দ্রে প্রতি বছরই ভোটার সংখ্যা কমছে। অথচ শহরতলির দুই কেন্দ্র যাদবপুরে ৭৮ শতাংশ এবং বারাসতে ৭৪ শতাংশ মানুষের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। কমিশন কর্তারা জানাচ্ছেন, খাস কলকাতা থেকে বাস তুলে শহরতলিতে চলে যাওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে। তাই কলকাতার চেয়ে আশপাশের এলাকায় জনসংখ্যা-ভোটার অনুপাত বেশি। আবার উত্তর কলকাতার মতো কেন্দ্রে, যেখানে ভোট দেওয়ার প্রবণতা কম, সেখানে অনেকে ভোটার তালিকায় নাম তোলেন না। ফলে জনসংখ্যা-ভোটার অনুপাতও কম হয়।

কমিশন কর্তাদের মতে, অনেক সময় ঠিকানা বদলের ফলে ভোটার সংখ্যার অদলবদল হয়, যা জনগণনার তথ্য থেকে ধরা পড়ে না। কারণ, জনগণনা হয় প্রতি ১০ বছর অন্তর আর ভোটার তালিকা সংশোধন হয় প্রতি বছর। আবার, এনআরসি ঘিরে গত এক বছরে যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার জেরে এত দিন উদাসীন অনেক নাগরিক ভোটার তালিকায় নাম তোলাচ্ছেন, এমনটাও হতে পারে বলে অনেকের অভিমত।

যদিও কমিশন কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, কোনও একটি বিধানসভায় জনসংখ্যা কত, তা কমিশনের জানা। ভোটার তালিকায় নাম তোলা, কাটা বা ঠিকানা পরিবর্তনের ধারাবাহিক হিসেবও কমিশনের কাছে রয়েছে। জনসংখ্যার কত অংশ ১৮ বছরের নীচে, মৃত্যুর হার কী, ইত্যাদি দেখে কমিশন ভোটার হওয়ার যোগ্য জনসংখ্যার হিসেব কষে। ভোটার সংখ্যা সাধারণ ভাবে মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের হওয়ার কথা বলে তাঁরা মনে করেন। কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, সারা দেশে মোট জনসংখ্যার ৬৩ শতাংশ মানুষের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে। বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষা অসমের জনসংখ্যা-ভোটার অনুপাত ৬১। ত্রিপুরায় ৬৫। মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিজোরামের মতো সীমান্তঘেঁষা রাজ্যগুলিতে এই হার ৬০ এর নীচে। তবে পশ্চিমবঙ্গে এই গড় বরাবরই কিছুটা বেশি।

এই পরিস্থিতিতে ভোটার তালিকার চলতি সংশোধনের সময় সংশ্লিষ্ট কর্মী-আধিকারিকদের বাড়তি সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement