গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বৃদ্ধতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে একের পর এক কমিটিতে নতুনদের জায়গা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএম। পলিটব্যুরো থেকে সদ্য বিদায় নিয়েছেন অশীতিপর নেতা বিমান বসু। এ বার বড় শরিকের দেখানো পথেই হাঁটতে চায় বামফ্রন্টের অন্য শরিকরাও। শনিবার ভূবনেশ্বরে শেষ হয়েছে বামফ্রন্টের অন্যতম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় পরিষদের বৈঠক। সিপিএমের পথে চলে ফব-তেও নতুন নেতৃত্ব তৈরি করতে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুনদের দলে অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি, নতুন মুখদের যাতে পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বে বসার সিদ্ধান্ত কার্যকর করানযায়, সেই লক্ষ্যেও পদক্ষেপ করেছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু প্রতিষ্ঠিত দল। জাতীয় পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফরওয়ার্ড ব্লকের কোনও সাধারণ সম্পাদক আর ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। কেবল ভোটে না দাঁড়ানোই নয়, সাধারণ সম্পাদকরা কেউ তিনবারের বেশি পদে থাকতে পারবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফব নেতৃত্ব। সর্বস্তরের কমিটিতে থাকার জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ধার্য করছে ৭৫। পাঁচ বছর অন্তর দলীয় সম্মেলন পর্বে প্রত্যেক কমিটি থেকে বয়স ও কাজের ভিত্তিতে অন্তত ১০ শতাংশ নেতাকে বাদ দিয়ে নতুনদের সুযোগ দেওয়াও বাধ্যতামূলক করছে তারা।
আরএসপি-ও নতুনদের তুলে আনার পথেই চলতে চাইছে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ৯-১০ তারিখে বালুরঘাটে বসতে পারে তাদের রাজ্য সম্মেলন। আর নভেম্বর মাসে কেরলের কুইলনে হবে আরএসপি-র জাতীয় সম্মেলন। সেই সম্মেলনগুলি থেকেই নতুন মুখ তুলে আনার বিষয়ে উদ্যোগী হতে পারে এই বাম দলটি। সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক মনোজ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএম-কে দেখে আমাদের হিংসা হয়। এত কম সময়ে তাঁরা এত বেশি সংখ্যক মুখ তুলে আনতে পেরেছে। আগামী সম্মেলন থেকেই আমরাও যুব নেতৃত্ব তুলে আনতে সিদ্ধান্ত কার্যকর করব।’’ প্রসঙ্গত, সিপিএমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের গড় বয়স কোনওমতেই ৭৫ বছরের ঊর্ধ্বে হওয়া চলবে না।
সম্প্রতি দিল্লিতে সিপিআই জাতীয় পরিষদের বৈঠকেও নতুন প্রজন্মের নেতাদের দলে জায়গা করে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। ব্রাঞ্চ কমিটি থেকে শুরু করে জেলা ও রাজ্য পরিষদে নির্দিষ্ট সংখ্যায় যুব নেতৃত্বের পাশাপাশি মহিলাদেরও জায়গা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিপিআইয়ের জাতীয় পরিষদের সদস্য প্রবীর দেব বলেন, ‘‘নতুনদের জায়গা করে দিতে দল বদ্ধপরিকর। তার জন্য সিপিআই শীর্ষ নেতৃত্ব একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে।’’ সেই গাইডলাইন অনুযায়ী, ব্রাঞ্চ কমিটিতে বেশি সংখ্যক ৪০-৪৫ বছরের নেতাদের জায়গা দিতে হবে। জেলা ও রাজ্য পরিষদে ৫০ বছরের নীচে পার্টি কর্মীদের ৪০ শতাংশ জায়গা পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব হবে ১৫ শতাংশ।