হলদিয়ায় জন্মদিনের অনুষ্ঠানে লক্ষ্মণ শেঠ। নিজস্ব চিত্র।
বাম-রাম-কংগ্রেসের পর এ বার তৃণমূল? রাজনীতির মূল স্রোতে ফিরে আসতে এ বার ‘দিদির’ মুখাপেক্ষী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন তমলুকের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠ!
সোমবার নিজের ৭২তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্তুতি শোনা গিয়েছে একদা হলদিয়ার দাপুটে নেতা লক্ষ্মণের মুখে। তিনি বলেছেন, “তৃণমূলে যোগ দিতে ভীষণ ভাবে আগ্রহী। একাধিক ভাবে দিদি’র কাছে বার্তা পাঠিয়েছি।’’ ‘দিদি’ বা তাঁর দলের তরফে এখনও কোনও ‘পজিটিভ রেসপন্স’ মেলেনি বলে জানিয়ে লক্ষ্মণ বলেন, ‘‘তবে নেগেটিভ রেসপন্সও তো মেলেনি।’’
লক্ষ্মণ বলেন, “যে কোনও মুহূর্তে আমি তৃণমূলে যোগদান করতে পারি, যদি নেত্রী চান।’’ তৃণমূলনেত্রী কাজকর্মের ঢালাও প্রসংসা করার পাশাপাশি মমতার কাজের মধ্যে বামপন্থী’র ছোঁয়া আছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। লক্ষ্মণের দাবী, “কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে রাজ্যের সমস্ত প্রকল্পই অত্যন্ত ভাল। দিদি ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের পক্ষে এবং জনকল্যাণকামী কাজের জন্য তাঁর উদ্যোগ বামপন্থার সঙ্গে মেলে।
জন্মদিনে নিজের পরিচালিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আইকেয়ার পরিচালিত ‘হলদিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি’-র পাশের মাঠে জনসভা করেন লক্ষ্মণ। এই অনুষ্ঠানেই নিজের সুপ্ত ইচ্ছের কথা জানান। এক সময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর হাত ধরে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে রাজনীতির ময়দানে উত্থান হয়েছিল। এরপর বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যয়ের আমলে তাঁর ক্ষমতা অপরিসীম হয়ে ওঠে। একের পর এক শিল্প কারখানা গড়তে গিয়ে জমি অধিগ্রহণ থেকে নির্মাণ কার্যে একচ্ছত্র দাপট ছিল তাঁর।
২০০৭ সালের নন্দীগ্রামে শিল্প গড়ার ‘ভাবনা’ এবং ‘পদক্ষেপ’ বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছিল লক্ষ্মণের রাজনৈতিক জীবনে। ২০১৪ সালে সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর নিজের দল ‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ গড়েছিলেন। পরে বিজেপি-তে যোগ দেন। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে তমলুক আসনে লড়েছিলেন তিন বারের সাংসদ। কিন্তু জামানত বাঁচাতে পারেননি।