মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ সহযোগী তাপস মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র।
ইডি দফতরে রবিবার ৮ ঘণ্টা জেরার মুখে পড়েন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ সহযোগী বলে পরিচিত তাপস মণ্ডল। জিজ্ঞাসাবাদের শেষে বেরিয়ে তিনি জানান, পরবর্তীকালে ইডি তলব করলে বা কোনও নথি চাইলে তিনি দেবেন।
রবিবার সকালে তলব করা হয় তাপসকে। ইডির নজরে ছিল তাপসের ব্যবস্থা করা অনলাইন ক্লাস। সেই অনলাইন ক্লাসের নথি নিয়েই তাপসকে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। দুপুর ১২টা নাগাদ তাপস নথি নিয়ে ইডি দফতরে পৌঁছন। সেখান থেকে বার হন রাত প্রায় ৯টা নাগাদ।
অনলাইন ক্লাস নিয়ে টাকা গরমিলের সন্দেহের ভিত্তিতেই তাপসকে তলব করা হয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। তাপস ‘অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশন (এবিটিটিএএ)’-এর প্রেসিডেন্ট। এবিটিটিএএ-এর আওতায় অনেক কলেজ রয়েছে যে কলেজগুলিতে ডিএলএড-এর কোর্স করানো হয়। কোভিড আবহে স্কুল-কলেজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এবিটিটিএএ-র পক্ষ থেকে ডিএলএড-এর ৪০ হাজার পড়ুয়ার জন্য মাথা পিছু ৫০০ টাকার বিনিময়ে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়। সেই অনলাইন ক্লাসগুলির পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় টালিগঞ্জের এক সংস্থাকে। প্রায় দু’কোটি টাকায় এই চুক্তি হয় বলেও ইডি সূত্রে খবর। আর এই টাকা কোথায় পাঠানো হয়েছে এবং কাকে পাঠানো হয়েছে, তা জানতেই তাপসকে তলব করা হয়েছে। এই টাকা মানিকের কোনও আত্মীয়ের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে ইডি।
যদিও ইডি দফতরে ঢোকার মুখে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলার সময় তাপস জানান, এই অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে মানিক বা তাঁর ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যের কোনও সম্পর্ক নেই।
তাপস আনন্দবাজার অনলাইনকে আগেই জানিয়েছিলেন, যে সংস্থাকে অনলাইন ক্লাস পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই সংস্থা একটি স্টুডিয়ো তৈরি করেছিল তাঁরই মহিষবাথানের ‘মিনার্ভা এডুকেশনাল অ্যান্ড ওয়েলফার’-এর দফতরে। সেই দফতরে ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালানো হয়েছে ইডি আধিকারিকদের পক্ষ থেকে।
তাপস এ-ও জানিয়েছিলেন, এই অনলাইন ক্লাসগুলি নেওয়ার জন্য শিক্ষকের ব্যবস্থা করতে বলে মানিকের কাছে সাহায্যও চেয়েছিলেন তিনি। মানিক তাঁকে সেই বিষয়ে সাহায্য করেন বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, এর আগে ২০ অক্টোবরও তাপসকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ নাগাদ ইডি দফতরে হাজিরা দেন তাপস। এর পর তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সারা দিন-রাত জিজ্ঞাসাবাদ চলার পর ভোর রাতে ইডির দফতর থেকে বেরিয়েছিলেন তাপস।