নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।
লন্ডনে তাঁর বাড়ি নেই। ২টি পাসপোর্টও নেই। যদি তা থাকে, তা হলে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হোক। মঙ্গলবার আদালত থেকে বেরোনোর পরও নিজের বক্তব্যে অনড় রইলেন মানিক ভট্টাচার্য। স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ককে। লন্ডনে বাড়ি এবং ২টি পাসপোর্ট নিয়ে আদালতেও এই কথা জানিয়েছিলেন মানিক। আদালত থেকে বেরিয়ে গ্রেফতারের পর এই প্রথম সংবাদমাধ্যমে মুখ খুললেন তিনি।
আদালত থেকে বেরোনোর পর সংবাদমাধ্যমে আঙুল উঁচিয়ে মানিক বলেন, ‘‘লন্ডনে আমার বাড়ি নেই, বাড়ি নেই, বাড়ি নেই। আমার ২টি পাসপোর্ট নেই, পাসপোর্ট নেই, পাসপোর্ট নেই। থাকলে ফাঁসি দেওয়া হোক।’’ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে মানিক বলেন, ‘‘দুটো প্রশ্ন করা হয়েছিল। তার উত্তর দিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।’’
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত বছরের ১১ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয়েছিল মানিককে। তাঁকে গ্রেফতারের পর একাধিক তথ্য হাতে পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেন তদন্তকারীরা। এই আবহে গত সপ্তাহে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিয়োগ মামলার শুনানিতে মানিক প্রসঙ্গে বেশ কয়েকটি মন্তব্য করেছিলেন। বিচারপতি সিবিআইকে বলেছিলেন, মানিক সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য তো তিনিই জানেন। সে সব সিবিআই তদন্তে উঠে আসছে না কেন? কী তথ্য, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিয়ে বিচারপতি কয়েকটি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন সিবিআইকে। জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘‘কত বার লন্ডনে গিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য? তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানেন? আমি বলতে পারি। শুনবেন? লন্ডনে তাঁর বাড়ির পাশে কার বাড়ি জানেন? আমি জানি।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সেই বক্তব্যের পর মঙ্গলবার আদালতে মানিক বলেন, ‘‘১৯৮৯ সালে যাদবপুরে একটা ফ্ল্যাট কিনেছিলাম। পরিবার বড় হওয়ার পর বড় ফ্ল্যাট নেওয়া হয়। এ ছাড়া নদিয়াতে বাড়ি আছে। আমি সিবিআইকে তো সবই জানিয়েছি।’’ পাশাপাশি মানিক এ-ও বলেন, ‘‘বলা হচ্ছে, লন্ডনেও নাকি একটা বাড়ি আছে আমার। আমি বলছি, সত্যিই যদি লন্ডনে বা অন্য জায়গায় আমার বাড়ি থাকে, তবে আমাকে ঝুলিয়ে দিক।’’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্যের পর মানিকের এ হেন মন্তব্য এই পর্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পরে আদালত থেকে বেরিয়েও একই মন্তব্য করলেন মানিক।
আদালতে মানিকের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ইডি বলছে, মানিক সাক্ষীকে প্রভাবিত এবং প্রমাণ লোপাট করতে পারেন। কারণ তিনি শাসকদলের বিধায়ক। কিন্তু যে কেউ যে কোনও দলে থাকতে পারেন। দল এ ক্ষেত্রে তদন্তের বিষয় নয়। অপরাধ তদন্তের বিষয়। বলা হচ্ছে মানিকের দু’টি পাসপোর্ট রয়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে একটি পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণের পর পরের পাসপোর্টের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়।’’