মানিক ভট্টাচার্য, তাঁর পুত্র শৌভিক এবং স্ত্রী শতরূপার বিদেশ ভ্রমণে নজর ইডির। ফাইল ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের পরিবারের বিদেশ ভ্রমণে নজর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি)। তদন্তকারীরা মনে করছেন, বিদেশ ভ্রমণে প্রায় ৫ কোটি টাকা খরচ করেছে মানিকের পরিবার। যার অধিকাংশ খরচ করা হয়েছে নগদেই।
ইডি সূত্রে খবর, ২০১২ সালের পর থেকে মানিকের পরিবারের সদস্যেরা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছেন। মানিকের পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্য ইংল্যান্ড, আমেরিকা, মলদ্বীপ, মালয়েশিয়া-সহ একাধিক দেশে গিয়েছেন। কখনও শৌভিক একাই বিদেশে গিয়েছেন, কখনও গিয়েছেন সপরিবারে। তাঁদের ভ্রমণের তালিকায় রয়েছে সুইৎজ়ারল্যান্ড,জামার্নির মতো ইউরোপের একাধিক দেশ, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকি, চিনও। প্রায় প্রতিটি দেশেই দীর্ঘ দিন থেকেছেন তাঁরা। এই সব ভ্রমণের উদ্দেশ্য ইডির কাছে স্পষ্ট নয়।
ইডি সূত্রে দাবি, এই সব দেশ ভ্রমণের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নগদ অর্থ খরচ করা হয়েছে। কারণ, ব্যাঙ্ক থেকে বড়সড় কোনও লেনদেনের প্রমাণ মেলেনি। তদন্তকারীদের দাবি, বেশ কিছু জায়গায় শৌভিকের সঙ্গে মানিক নিজেও গিয়েছিলেন। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিদেশযাত্রা, বিদেশে তাঁদের জমিজমার পরিমাণ এবং বিদেশে গিয়ে তাঁরা কোথায় কোথায় থেকেছেন, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের কাছে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়ে চিঠিও দিয়েছে ইডি।
নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে মানিককে গ্রেফতার করার পর ইডি যে সাপ্লিমেন্টরি চার্জশিট দিয়েছিল, তাতে মানিকের স্ত্রী শতরূপা এবং পুত্র শৌভিকের নাম রয়েছে। তাঁরা বুধবার আদালতে হাজিরা দেন। জামিনের আবেদনও করেন। ইডির তরফে এই জামিনের বিরোধিতা করা হয়েছে। তাদের দাবি, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে মানিকের স্ত্রীর যে জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের হদিস মিলেছে, তাতে দুর্নীতির টাকা থাকতে পারে। মানিকের কাজ সম্পর্কে সবই তিনি জানতেন। ফলে দুর্নীতিতে তাঁরও ভূমিকা থাকতে পারে।
পাশাপাশি, মানিকপুত্র শৌভিকের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। ইডির দাবি, শৌভিক পড়াশোনার সূত্রে ইংল্যান্ডে দীর্ঘ দিন ছিলেন। রেসিডেন্স ভিসায় তিনি ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়েই এই ভ্রমণ বলে অনুমান তদন্তকারীদের। অভিযোগ, ইংল্যান্ডে সম্পত্তি সংক্রান্ত তথ্য গোপন করছে মানিকের পরিবার।