জেলে থাকার কারণে বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে পারেননি নওশাদ। ফাইল চিত্র।
বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিকে এত দিন জেলে রাখা নিয়ে মুখ খুললেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নওশাদের জেল হেফাজতে থাকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। জবাব দিতে গিয়ে অবশ্য বিমান জানিয়েছেন, তাঁর মতামত একজন আইনজীবী হিসাবে। বিধায়ক বা বিধানসভার স্পিকার হিসাবে নয়। তিনি বলেছেন, ‘‘ওঁর আইনজীবীদের উচিত ছিল এ বিষয়ে যুক্তিযুক্ত ভাবে পদক্ষেপ করা। আমি ব্যক্তিগত ভাবে এত দিন জেলে রাখার মতো কারণ আছে বলে মনে করি না।’’ বুধবারই নওশাদদের গ্রেফতারি সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের বেঞ্চ বলে, ‘‘একটি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে?’’
কলকাতা হাইকোর্টের এমন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করায় বিমান বলেন, ‘‘বিচারপতিরা তো বেল দিতেই পারেন। এমন কথা বলার কী মানে আছে? তিনি তো নির্দেশ দিতেই পারেন। বিচারপতি হিসেবে যদি উনি মনেই করেন যে, জামিন হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। সে ভাবে তিনি নির্দেশ দিতেই পারেন। বেল হয়ে যাবে বলেই আইনজীবী হিসেবে মনে করি।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘স্পিকার বা বিধায়ক হিসেবে নয়। আইনজীবী হিসেবে মনে করি না ওর এত দিন জেলে থাকা উচিত।’’ গত ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচি ঘিরে বিক্ষোভের জেরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে আইএসএফ কর্মীদের। আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ-সহ বহু সমর্থককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর থেকে নওশাদ এবং আইএসফের ওই কর্মী-সমর্থকেরা এখনও জেলেই রয়েছেন।
জেলে থাকার কারণেই বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে পারেননি নওশাদ। সম্প্রতি ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদকেও ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই দিন জামিন পেলে ৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্বে যোগ দিতে পারবেন তিনি। নওশাদ গ্রেফতার হওয়ার পর ২৪ জানুয়ারি বিমান বলেছিলেন, ‘‘আমাদের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় এমন অনেক বিধায়ক রয়েছেন যাঁরা আগের অধিবেশনে যোগ দিতে পারেননি। কার বিরুদ্ধে মামলার কতটা ওজন আছে সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। যাঁরা আমাদের প্রশাসনে রয়েছেন তাঁরা এ বিষয়ে বলতে পারবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার মনে হয় এ ভাবে চাপ তৈরি করার কোনও মানে হয় না। একজন বিধায়ক ও তাঁর দল রাস্তায় নেমে ভাঙচুর করবে। জনজীবন স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করবে, আর ধর্মের আড়ালে গিয়ে তিনি নিরাপত্তা চাইবেন, বা বিধানসভার সদস্য হিসেবে তাঁকে নিরাপত্তা দিতে হবে, এমনটা নয়। আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।’’ তবে বুধবার কিছুটা হলেও বিমানের গলায় নওশাদ নিয়ে শোনা গিয়েছে সহানুভুতির সুর।