মানিক ভট্টাচার্যকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হয়। ফাইল চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য সম্পর্কে আরও চাঞ্চল্যকর দাবি করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হয়েছে মানিককে। আদালতে ইডির তরফে দাবি করা হয়েছে যে, মানিকের জামাই ও ভাইয়ের অ্যাকাউন্টেও টাকার লেনদেন হয়েছে। পাশাপাশি আরও অনেকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে।
ফলে তাঁদের ভূমিকাও ইডির আতশকাচের তলায়। সেই সঙ্গে মানিক-পুত্র শৌভিকের যে সংস্থা রয়েছে, তার নথিপত্র দেখভাল করতেন প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি, এমন দাবিও করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
টেট মামলার তদন্তে মানিকের গ্রেফতারির পর থেকেই আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়ে একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছে বলে দাবি করে আসছে ইডি। এর আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিযোগ করেছিল যে, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে মানিকের স্ত্রীর যৌথ অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কেওয়াইসি-র তথ্য আপডেট করানো হয়েছে। অথচ ওই অ্যাকাউন্টের যুগ্ম ধারক ২০১৬ সালেই প্রয়াত হয়েছেন। সেই তথ্য জানানো হয়নি। যদিও এই সংক্রান্ত অভিযোগ অস্বীকার করে মানিকের আইনজীবী জানিয়েছিলেন যে, ১৯৮১ সাল থেকেই ওই অ্যাকাউন্ট রয়েছে এবং অ্যাকাউন্টের ধারক হিসাবে থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তি আসলে সম্পর্কে মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যের পিসেমশাই। ইডি অবশ্য মানিকের আইনজীবীর ওই যুক্তি পরক্ষণেই নস্যাৎ করে দেয়। তারা আদালতকে বলে, ২০১৬ সালে ওই ব্যক্তি মারা যান। কিন্তু তার পরও তিন বছর ধরে নিয়মিত কেওয়াইসি আপডেট করানো হয়েছে অ্যাকাউন্টটির। প্যান কার্ডের নম্বরও দেওয়া হয়েছে। অথচ মানিকের স্ত্রীর ‘আত্মীয়ের’ মৃত্যুর খবর জানানো হয়নি ব্যাঙ্ককে।
অন্য দিকে, মানিক-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তাপস মণ্ডলকে কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার সময় সংবাদমাধ্যমে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন তাপস। ডিএলএড কোর্সে ভর্তির জন্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে অফলাইনে ভর্তির জন্য প্রায় ২১ কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাপস। লোক পাঠিয়ে এই টাকা সংগ্রহ করতেন মানিক! এমনটাই অভিযোগ করেছেন তাপস। এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার দুর্নীতি মামলায় মানিকের ভাই ও জামাইয়ের ভূমিকাও যে ভাবে তুলে ধরল ইডি, তা এই পর্বে নয়া মাত্রা যোগ করল।